নিউজ ডেক্স:
কণ্ঠস্বর-এর কক্সবাজারের স্টাফ করেসপন্ডেন্ট ও স্থানীয় দৈনিক মেহেদীর বিশেষ প্রতিবেদক শাহীন মাহমুদ রাসেলকে ইয়াবা মামলায় ফাঁসানোর অপচেষ্টার অভিযোগের সত্যতা পেয়েছে তদন্ত কমিটি।
এ ঘটনায় কক্সবাজার মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক (এডি) এ.কে.এম দিদারুল আলমের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য তদন্ত কমিটি সুপারিশ করেছে বলে জানা গেছে।
বুধবার (১২ মার্চ) বিকালে সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র সময়ের কণ্ঠস্বরকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
সম্প্রতি কক্সবাজারে মাদকের এডি কর্তৃক সাংবাদিককে মাদক মামলায় ফাঁসানোর অপচেষ্টার অভিযোগ উঠে। এ ঘটনায় সময়ের কণ্ঠস্বরসহ দেশের শীর্ষস্থানীয় জাতীয় ও স্থানীয় গণমাধ্যমগুলোতে প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।
এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম বিভাগের অতিরিক্ত পরিচালক মো. জাহিদ হোসেন মোল্লার নেতৃত্বে চার সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। সেই কমিটিতে আরও রয়েছেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক হুমায়ুন কবির খন্দকার ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ কার্যালয় চট্টগ্রাম উত্তরের সহকারি পরিচালক রামেশ্বর দাসসহ তিনজন কর্মকর্তা।
মঙ্গলবার (১১ মার্চ) দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কক্সবাজারে তদন্ত কার্যক্রম চালানো হয়। তদন্ত দল অভিযুক্ত এডি দিদারুল, তার টিমের অন্যান্য সদস্য, ভুক্তভোগী সাংবাদিক শাহীন মাহমুদ রাসেল, সিএনজি চালক বজল করিমের স্ত্রী রাশেদা বেগম এবং সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সাক্ষ্য গ্রহণ করে ও লিখিত জবানবন্দি নেয়। একই সঙ্গে ঘটনার সাথে সংশ্লিষ্ট ভিডিও ও অন্যান্য প্রমাণাদি সংগ্রহ করা হয়। যা পরে ওই রাতেই ই-মেইল যোগে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়ে প্রেরণ করা হয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সাক্ষ্য প্রমাণের ভিক্তিতে এডি দিদারুল আলমের বিরুদ্ধে সাংবাদিককে ইয়াবা ব্যবসায়ী প্রমাণের চেষ্টার অভিযোগের প্রাথমিকভাবে প্রমাণ পেয়েছে তদন্ত দল। তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে যাচ্ছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর।
এদিকে জানা গেছে, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের গঠিত তদন্ত টিমের কাছে জবানবন্দি দিতে যাওয়ার পর মঙ্গলবার বিকালে কক্সবাজার জেলার মূলধারার সাংবাদিকদের সামনে সাংবাদিক শাহীন মাহমুদ রাসেলের কাছে নিজের ভুল স্বীকার করে এবারের মতো ক্ষমা চেয়েছেন নানা অপকর্মে মশগুল এডি দিদারুল। এছাড়া বিষয়টি সমাধানের জন্য নানা মাধ্যমে তাঁকে মোটা অংকের টাকার প্রস্তাব দেন অসাধু এই কর্মকর্তা।
সাংবাদিক শাহীন মাহমুদ রাসেল জানান, ‘আমি সত্যের পক্ষে দাঁড়িয়েছিলাম বলেই আমাকে টার্গেট করে মিথ্যা মাদক মামলা দেওয়ার অপচেষ্টা করেছে। এডি দিদারুলের বিরুদ্ধে তদন্ত হলেও আমি শঙ্কিত, কারণ তিনি ইতোমধ্যে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের মোটা অংকের টাকা দিয়ে ম্যানেজ করার চেষ্টা করছেন বলে গোপন সূত্রে জানতে পেরেছি। আমি চাই, সুষ্ঠু তদন্ত হোক এবং প্রকৃত সত্য যেন বেরিয়ে আসে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে যে ষড়যন্ত্র করা হয়েছে, তাতে আমার পরিবার এবং আমি সামাজিকভাবে সম্মানহানির মুখে পড়েছি। যদি নিরপেক্ষ তদন্ত না হয়, তাহলে আমি আদালতের শরণাপন্ন হবো। এডি দিদারুলের অন্যায়ের বিচারের জন্য আমাকে যেখানে যেতে হয়, সেখানেই যাবো।’
এ বিষয়ে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের জনসংযোগ কর্মকর্তা (পিআরও) মোস্তাক আহমেদ সময়ের কণ্ঠস্বরকে বলেন, এ বিষয়ে কঠোর অবস্থানে রয়েছি আমরা। তদন্ত কমিটির রিপোর্টের ওপর ভিক্তি করে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।