• শুক্রবার, ০৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ১১:৩০ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ খবর
কক্সবাজারের টেকনাফের সীমান্তে ৪ লাখ ইয়াবা জব্দঅভিশপ্ত মানুষের ঠিকানা শারীরিক মানসিক যন্ত্রণাদায়ক জাহান্নামআহত সাংবাদিকের চিকিৎসা সহায়তায় এগিয়ে আসুনটেকনাফে বিজিবির অভিযানে ২লাখ ২০হাজার ইয়াবা ও বিদেশী মদ উদ্ধারটেকনাফে ইউপি চেয়ারম্যান গ্রেফতারমোনাফেকরা দেশ মাটি মানুষ ও সৃষ্টিকর্তার সবচেয়ে বড় শত্রুচকরিয়া ঢ়েমুশিয়া মুছারপাড়ার জা জমি জবর দখলকারীদের সন্ত্রাসী হামলায় তিন নারী আহতপৌরসভা ১নং ওয়ার্ড পশ্চিম শাখা শ্রমিক দলের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠিতভোটার হালনাগাদ নিয়ে কাউয়ারখোপ পরিষদ চেয়ারম্যান শামসুল আলমের দুর্নীতি,টাকা না দিলে ফাইল মিলে না ২০ দিনেওদেশের সাধারন মানুষ সাথে আছে বলেই বিএনপি জনপ্রিয় ও শ্রেষ্ট দল: সাবেক এমপি কাজল

খুনী প্রদীপের ফাঁসির রায় দ্রুত কার্যকরের দাবি : বিচারকের বিরুদ্ধে মাদক সিন্ডিকেটের ষড়যন্ত্র!

কক্সবাজারবানী’র সাথে থাকুন
আপডেট : সোমবার, ২৪ জুলাই, ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক::
কক্সবাজারের বহুল আলোচিত অবসরপ্রাপ্ত মেজর রাশেদ মোহাম্মদ সিনহা কে তৎকালীন টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপ দাশের নির্দেশে পূর্বপরিকল্পিত ভাবে শামলাপুর এপিবিএন পুলিশের চেক পোস্টে পবিত্র ঈদুল আযাহার আগের রাতে গুলি করে হত্যা করে।২০২০ সালের ৩১ জুলাই বাংলাদেশ সময় রাত ৯ টা ২৫ মিনিটে মেজর মোহাম্মদ রাশেদকে গুলি করে হত্যা করা হয়। বাহারছড়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ লিয়াকত আলী ৪ টি গুলি করে মেজর সিনহা কে হত্যা করেন। লিয়াকত আলী পুলিশের বিশেষ দল সোয়াটের সদস্য। তাকে গুলি করার আদেশ দেন টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশ। গুলিবিদ্ধ অবস্থায় রাস্তায় পড়ে ছিলেন মেজর সিনহা। তার মৃত্যু নিশ্চিত করতে পরবর্তীতে ওসি প্রদীপ কুমারও ২টি গুলি করেন। প্রায় পৌনে এক ঘণ্টা পর একটি ট্রাকে করে তাকে হাসপাতাল নেয়া হয়। কিন্তু তার আগেই তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

তাছাড়া মাদকের অভিযানের দোহাই দিয়ে প্রায় তিনশতাধিক নিরহ মানুষকে টাকা নিয়ে ক্রসফায়ার দেয় খুনি প্রদীপ । তার বিরুদ্ধে হত্যা ধর্ষণ চাঁদাবাজি সহ মাদক ব্যবসায়িদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা লেনদেন করে মাদককারবারি সাজিয়ে ক্রসফায়ার সহ জমি দখলের মত অহরহ অভিযোগ তুলে টেকনাফ বাসি। যা পরবর্তীতে আদালতে প্রমাণ হয়।মেজর সিনহা হত্যাকাণ্ডের পর সেনাবাহিনী এবং পুলিশ বাহিনীর মধ্যে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়।
এই ঘটনার পরপরই পুলিশের মহাপরিদর্শক বেনজীর আহমেদ এবং তৎকালীন সেনাপ্রধান আজিজ আহমেদ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। ৫ আগস্ট ২০২০ তারিখ এক সংবাদ সম্মেলনে অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্যদের সংগঠন “রিটায়ার্ড আর্মড ফোর্সেস অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন-রাওয়া” দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে সিনহা হত্যা মামলার বিচার দাবি করে তা দ্রুত নিস্পত্তির আহ্বান জানায়। এটি লক্ষ্য করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। এরপর ৫ আগস্ট মেজর সিনহার বোন টেকনাফ থানার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার দাশ এবং উপ-পরিদর্শক লিয়াকত আলীসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। ৯ জনকেই দায়িত্ব থেকে প্রত্যাহার করা হয়। এই মামলায় বর্তমানে ৭ জন আসামী কারাগারে রয়েছেন।

২০২০ সালের ২৭ আগস্ট আদালতে স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি দেন এপিবিএনের তিন সদস্য এসআই মো. শাহজাহান, কনস্টেবল মো. রাজীব ও মো. আব্দুল্লাহ। একই মামলায় টেকনাফ থানার বরখাস্ত হওয়া ওসি প্রদীপ ও এসআই নন্দদুলাল রক্ষিতকে তদন্তকারী সংস্থা হিসেবে র‍্যাব জিজ্ঞাসাবাদ করে। ৩০ আগস্ট মামলার প্রধান আসামি টেকনাফের বাহারছড়া পুলিশ ফাঁড়ির সাবেক ইনচার্জ লিয়াকত আলী সাবেক মেজর সিনহা হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দেন।

২০২২ সালের ৩১ জানুয়ারি কক্সবাজার জেলা জজ মোহাম্মদ ইসমাইল এর আদালত ১৫ জন অভিযুক্তের রায় ঘোষণা করে। রায়ে প্রদীপ এবং লিয়াকতকে মৃত্যুদণ্ড, ছয়জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং সাতজনকে খালাস প্রদান করে। এছাড়াও যাবজ্জীবন ছয়জন প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়, অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়।

মেজর সিনহা হত্যা রায়ের পরপরে প্রদীপ সিন্ডিকেটের মাদককারবারি ও ষড়যন্ত্রকারিরা মিলে কক্সবাজার জেলা দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ ইসমাইল এর বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্র লিপ্ত হয়েছে মোটা অংকের অর্থের মিশন নিয়ে। বিচারক মোহাম্মদ ইসমাইল এর এই রায় দেশে বিদেশে সাধারণ মানুষ সাধুবাদ জানাই। তাকে দেশের আপমর জনতা ন্যায় পরায়ণ জজ হিসেবে আখ্যায়িত করে। তাছাড়া প্রদীপের রায়ের মাধ্যমে সকল জুলুম কারিদের একদিন বিচারের মুখোমুখি হতে হবে সেই বার্তা পৌছানোর মাধ্যমে অপরাধ রোধ করা সম্ভব হয়েছে বলে আমজনতা মনে করেন। এমনকি সরকার এবং রাষ্ট্র কে একটি যুগান্তকারী রায় প্রদানের মাধ্যমে সকল ষড়যন্ত্র থেকে রক্ষা করেন। কক্সবাজার জেলা দায়রা জজ হিসেবে মোহাম্মদ ইসমাইল যোগদানের পর থেকে এই পর্যন্ত প্রায় তিন হাজারের অধির মামলা নিষ্পত্তি করেন। যা স্বাধীনতার পর থেকে দেশের ইতিহাসে বিরল। দেশে প্রথম সাহসিকতার সহিত মাদক মামলায় ৪ জনকে মৃত্যুদন্ড প্রদানের মাধ্যমে মাদককারবারিদের সর্তকতা সংকেত দেন যে মাদকের সাথে জড়িত হলে ফাঁসির আদেশ পেতে হবে। এই রকম একজন ন্যায় পরায়ণ জজ এর বিরুদ্ধে মাদককারবারি ও খুনি ওসি প্রদীপের অনুসারীরা যে ষড়যন্ত্র লিপ্ত হয়েছে তা শক্তহাতে প্রতিহত করার জন্য সরকারের কাছে জোরদাবি জানিয়েছেন জেলাবাসি। কক্সবাজার জেলা জজ মোহাম্মদ ইসমাইল ২০২০ সালের ২ ফেব্রুয়ারি যোগদান করার পর থেকে অদ্যাবধি তিন হাজারে অধিক মামলা নিষ্পত্তির মাধ্যমে আদালত থেকে মামলার জট কমিয়ে ফেলেন। তাছাড়া বিচার প্রার্থীদের জন্য প্রবেশন সুবিধা চালু করেন করার মাধ্যমে মামলার জট কমিয়ে আনতে অন্যান্য ভূমিকা পালন করেন।

জেলা জজ মোহাম্মদ ইসমাইল কর্তৃক উল্লেখ যোগ্য রায় গুলো হচ্ছে মেজন সিনহা হত্যা, শিশু আলো হত্যা, কলেজ ছাত্র ফয়সাল হত্যা, আত্মস্বীকৃত ১০১ মাদককারবারি মামলার রায় সহ মাদক মামলায় চারজনের মৃত্যুদন্ড প্রদান সহ অসংখ্য মাদক মামলায় বিভিন্ন মেয়াদে সাজা প্রদান।


আরো বিভন্ন নিউজ দেখুন