মোঃ রেজাউল করিম, ঈদগাঁও, কক্সবাজার
কক্সবাজার সদরের জালালাবাদ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইমরুল হাসান রাশেদ এবং সদর যুবলীগের সহ সভাপতি মিজানুল হককে উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল করিম মাদুর নেতৃত্বে কক্সবাজার বিমানবন্দরে হত্যা চেষ্টার প্রতিবাদে আজ মঙ্গলবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। ঈদগাঁও পাবলিক লাইব্রেরি মিলনায়তনে ‘ঈদগাঁও বাঁচাও আন্দোলন’ এর ব্যানারে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব ও লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ঈদগাঁও ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ছৈয়দ আলম। শুরুতে পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত করেন ছাত্রলীগ নেতা সাইফুল ইসলাম। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন জালালাবাদ ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ কামাল।
লিখিত বক্তব্যযে ঈদগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ছৈয়দ আলম বলেন, ২০ জানুয়ারী বুধবার ঈদগাঁও থানা উদ্বোধনে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের আগমনের প্রতি সম্মান জানিয়ে এবং প্রশাসনের অনুরোধে পূর্ব নির্ধারিত প্রতিবাদ সভা স্থগিত ঘোষনা করা হয়েছে। থানা উদ্বোধনের পরে নতুন কর্মসূচী ঘোষনা করা হবে। তিনি বলেন, ঈদগাঁও থানাধীন যেকোন কাজে বহিরাগত ভাড়াটিয়াদের অপনেতৃত্ব ঈদগাঁওর রাজনৈতিক অঙ্গনে অরাজকর পরিবেশ সৃষ্টি করছে। তাদেরকে ঈদগাঁও থেকে বিতাড়িত করতে হবে। গত ১৭ জানুয়ারী কক্সবাজার বিমান বন্দরে চেয়ারম্যান রাশেদ ও যুবনেতা মিজানকে হত্যাচেষ্টা কক্সবাজার জেলার ইতিহাসে একটি ঘৃণ্য, কাপুরুষিত ও নেক্কারজনক হামলা। সদর উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক মাহমুদুল করিম মাদুসহ সংশ্লিষ্ট দুবৃর্ত্তদের এ ঘৃন্য কাজের নিন্দা ও ধিক্কার জানিয়ে ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবী করেন। ইমরুল হাসান রাশেদ ছাত্রজীবন থেকেই বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও চেতনাকে ধারণ করে মুক্তিযুদ্ধের লালিত স্বপ্ন ও মূল্যবোধকে সদা সর্বদা সমুন্নত রেখে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অবিচল নেতৃত্বে এবং তারই দেখানো পথে একজন নির্বাচিত চেয়ারম্যান হিসেবে গণমানুষের সেবক হিসেবে তার ঐকান্তিক প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন। ঈদগাঁও থানাধীন বৃহৎ এ জনপদের গনমানুষের পাশে থেকে এলাকার উন্নয়নে নিঃস্বার্থভাবে কাজ করে যাচ্ছেন চেয়ারম্যান রাশেদ। আপামর জনসাধারনের স্বার্থ রক্ষার জন্য সোচ্চার রয়েছেন। যাবতীয় দুর্নীতি, অনিয়ম, স্বেচ্চাচারিতা, আগ্রাসন এবং লুটপাটের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছেন। যে কারনে স্বার্থান্বেষী মহলের অভ্যন্তরে বিরাজমান রাজনৈতিক দলের লেবাসধারী, কায়েমীস্বার্থবাদী দুবৃর্ত্তদের প্রতিহিংসা ও রক্তচক্ষুর শিকার হয়েছেন চেয়ারম্যান রাশেদ এবং যুবনেতা মিজান। তথাকথিত হাইব্রীড রাজনৈতিক দুর্বৃত্তদের নিয়ে সহিংস মহড়া, আগ্রাসন এবং সর্বক্ষেত্রে ঈদগাঁওর শান্তিপ্রিয় মানুষ ও সামগ্রিক উন্নয়নের ধারাকে কুক্ষিগত করে লুটপাটতন্ত্র প্রতিষ্ঠার দুরভিসন্ধি বৃহৎ এ অঞ্চলের মানুষের ঐক্য, সংহতি ও ভ্রাতৃত্বকে বিভেদ ও পরস্পর বিরোধী এক মারমুখী পরিস্থিতির দিকে ঠেলে দিচ্ছে। ঐ দুর্বৃত্তচক্রের সাথে চেয়ারম্যান রাশেদ এবং মিজানের ব্যক্তিগত কোন স্বার্থদ্বন্দ্ব বা মতবিরোধ নেই। মতবিরোধ শুধু ঈদগাঁওর গণমানুষের স্বার্থ নিয়ে। এমন পরিস্থিতিতে আওয়ামী রাজনীতির ছত্রছায়ায় বেড়ে উঠা সহিংস দুর্বৃত্তচক্রকে প্রতিহত করে ঈদগাঁওর গণমানুষের উন্নয়ন ও যাবতীয় স্বার্থ সংরক্ষণ করে ঈদগাঁওকে বাঁচাতে আমাদের সকলকে দলমত, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। আমরা ঈদগাঁওর সাধারণ মানুষের মধ্যে কোন বিভেদ, বৈষম্য ও বিভাজন চাইনা। বৃহত্তর ঈদগাঁওর স্বার্থরক্ষায় এবং চলমান যাবতীয় অনিয়ম, বিশৃংখলা, স্বেচ্চাচারিতা, অপশাসন, দুর্নীতি ও অনিয়মের বিরুদ্ধে চেয়ারম্যান রাশেদের স্পষ্ট অবস্থান। চলমান সংকট নিরসনে জেলার রাজনৈতিক অভিভাবক ও প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন ইসলামাবাদ ইউপি সদস্য আবু বক্কর ছিদ্দিক বান্ডি। সুষ্ঠু সমাধান না হলে ঈদগাঁওবাসী তাদের স্বকীয়তা ও স্বার্থরক্ষায় আন্দোলন চালিয়ে যাবেন। ঈদগাঁওর গণমানুষের স্বার্থের বিরুদ্ধে অবস্থানকারী, লুটপাটকারী এবং দুর্বৃত্তদের মদদদাতা ও লালনকারীদেরকে ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিহত করার আহবান জানান ইউপি সদস্য ও ইসলামাবাদের সম্ভাব্য চেয়ারম্যান প্রার্থী আবদুর রাজ্জাক। জেলা যুবলীগের সহ সভাপতি হুমায়ুন কবির হিমু হুঁশিয়ারী উচ্চারণ করে বলেন, অপকর্মের নেপথ্য নায়ক, পৃষ্ঠপোষক ও দুর্বৃত্ততন্ত্রের প্রবক্তাদেরকে ঈদগাঁওর মাটি থেকে সমূলে উৎপাটন করা হবে। আমরা ঈদগাঁওকে চোখের সামনে ধ্বংস হতে দিতে পারিনা। কোন রাজনৈতিক দুর্বৃত্তের কাছে ঈদগাঁওর মান- মর্যাদা, সুনাম, সমৃদ্ধি ভুলুন্ঠিত করার সকল ষড়যন্ত্র দৃঢ়তার সাথে মোকাবেলা করা হবে বলে হুঁশিয়ারী দেন সদর উপজেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জামিল উদ্দিন শাম। ঈদগাঁওকে দুর্বৃত্তদের কবল থেকে রক্ষা করতে ঈদগাঁও থানাধীন প্রতিটি ইউনিয়নে ‘ঈদগাঁও বাঁচাও আন্দোলন’ কমিটি গঠন করা হবে।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, সদর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার ডা. শামশুল হুদা, জাতীয় শ্রমিকলীগ ঈদগাঁও সাংগঠনিক উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম, জালালাবাদ ইউপি সদস্য মোখতার আহমদ, জালালাবাদ ২ নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগ সভাপতি ও ইউপি সদস্য সাইফুল হক, শ্রমিকলীগ জালালাবাদ ইউনিয়ন শাখার সভাপতি উজির আলী, ঈদগাঁও ইউনিয়ন যুবলীগ সভাপতি এনাম রনি, ঈদগাহ ফরিদ আহমদ কলেজ ছাত্রলীগের আহবায়ক আবদুর রহমান নাহিদ, যুগ্ম আহবায়ক আবদুল্লাহ আল মামুন, ইউপি সদস্য আরমান উদ্দিন মোর্শেদ, সাংস্কৃতিক কর্মী কুতুব উদ্দিন চৌধুরী, মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ড, কক্সবাজার জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক নুরুল হাকিম নুকি, ঈদগাঁও ইউনিয়ন যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নুরুল হক, ব্যবসায়ী আবদুল হাকিম, প্রবাসী আওয়ামীলীগ নেতা শাহাব উদ্দিনসহ আওয়ামীলীগ ও অঙ্গ সংগঠনের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী এবং এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।