• শুক্রবার, ২১ মার্চ ২০২৫, ০১:৪৭ অপরাহ্ন
সর্বশেষ খবর
সার্চ মানবাধিকার সোসাইটি কক্সবাজার জেলা শাখার ইফতার মাহফিল ও সংবর্ধনা অনুষ্ঠান সম্পন্নযুগ্ম সচিব হলেন কক্সবাজারের ডিসি মোহাম্মদ সালাহউদ্দিনঢাকা থেকেই বাংলাদেশিদের জন্য ভিসা ইস্যু করবে অস্ট্রেলিয়াহাইকোর্টের বিচারপতি খিজির হায়াতকে অপসারণএপ্রিলের মাঝামাঝি সময়ে দেশে ফিরবেন বেগম খালেদা জিয়ারাজনৈতিক হয়রানিমূলক ৬ হাজার ২০২টি মামলা প্রত্যাহারের সুপারিশকারাহাসপাতাল এখন ইয়াবা ব্যবসায়ীদের অবকাশ কেন্দ্র, ক্যান্টিনে গলাকাটা বানিজ্যচট্টগ্রামের ভাষায় প্রধান উপদেষ্টার ভাষণে উচ্ছ্বসিত রোহিঙ্গারা ঘরে ফেরার স্বপ্নে বিভোরপ্রানঢাল অভিনন্দন ও শুভেচ্ছাপেকুয়ায় ব্যবসায়ীকে হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন

মা, তোমার বিহনে…

কক্সবাজারবানী’র সাথে থাকুন
আপডেট : শুক্রবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২১

মা, তুমি এতো দ্রুত চলে গেলে?
তাতে আমার কষ্ট-বিরহ দিন দিন সীমাহীন বেড়েই চলেছে।

তুমি চলে যাওয়ার (৭এপ্রিল’২০২১ইং) পর থেকে আমার দিনগুলো নিদারুণ কষ্টে, বেদনায় ও বিভীষিকায় কাটে! কথায় কথায় অশ্রু ঝরে, ক্ষণে ক্ষণে দম বন্ধ হয়ে আসে। মা নির্ভরশীল তোমার এই ছেলেটার পক্ষে তোমাকে ছাড়া বেঁচে থাকাই দায়-অসম্ভব প্রায়।
‘”তোমাকে হারানোর ব্যথার তীব্রতায়, মাঝে মধ্যে আমি তোমার কাছে আসার পথ ও উপায়ও খুঁজে বেড়াই!

মা রে,
তোমার শূন্যতায় আমি ভালো নাই।
তুমি নাই তাই আমারও কেউ নাই।
তুমি বিহীন আমাকে আপনেরাই তাড়িয়ে বেড়ায়! তবে প্রতিবেশী-স্বজনেরা জনে জনে- “আমার জন্যে তোমার প্রাণঢালা দোয়া করার বয়ান” এলাকায় বলে বেড়ায় আর আমাকে শান্তনার বাণী শোনায়। আমার জীবনের পূঁজিও কেবল তোমার দোয়া, এছাড়া আর কিছুই নাই।

আমি তোমার বিরহে জ্বলে জ্বলে মনকে মিথ্যা শান্তনা দিতে গিয়ে কখনো বা হাসপাতালগুলোর বারান্দায়, অপরিচিত রোগীদের সীটে বা ডাক্তারদের চেম্বারে চেম্বারে, এলাকার তোমার যাতায়াত থাকা পাড়াপড়সীর দ্বারে দ্বারে, রাস্তায় ও পথে-ঘাটে তোমাকে মিথ্যে খুঁজে বেড়াই নিরবে।

মাগো,
তোমার আকস্মিক চলে যাওয়াতে, ব্যথিত কেবল আমি একা নই প্রায় প্রত্যেকেই মর্মাহত। কয়দিন আগেও ক্ষুদ্র স্বার্থে যারা তোমাকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করেছিল, তোমার চরম অসুস্থেও “তেমন কোন অসুখ নয়, অসুখের অভিনয়” এবং “এমন (স্ট্রোক করা) রোগীরা সহজে মরে না, বহু বছর বাঁচে” ইত্যাদি বলে বেড়ানো অমানুষ গুলোও এখন তোমার জন্যে কাঁদে।
আমাদের স্বজন-প্রতিবেশী ও আমার অবুঝ শিশুরা পর্যন্ত প্রত্যেকে তোমার অকস্মাৎ এভাবে চলে যাওয়াটা মেনে নিতে ও বিশ্বাস করতে দ্বিঁধাদ্বন্দে ভোগে এবং অবুঝ অনেকে অধীর আগ্রহে তোমার অপেক্ষায়ও থাকে।

প্রিয় মা আমার,
তোমার অসুস্থতার (৯মার্চ-৭ এপ্রিল) দিনগুলোতে আমার প্রতি তোমার এতটা আস্থা, সন্তুষ্টি ও সারাক্ষণ আমাকে পাশে থাকার কাকুতি-তাগিদে এবং মা-ছেলে এক সাথে উখিয়া-কক্সবাজারের হাসপাতাল ও ডাক্তার খানায় দৌঁড়ানীতে আরও সানিধ্যের মধ্যে হঠাৎ করে এভাবে তোমার চলে যাওয়াটা মেনে নেওয়া বা বিশ্বাস করা কষ্টকর বটে।

মা রে,
যে তুমি সারাক্ষণ ঘরোয়া কাজ-কামে ও ধর্ম পালনে এবং সবার সাথে অান্তরিকতায় সদা ব্যতিব্যস্ত থাকতে,
সেউ তোমার এভাবে চলে যাওয়া মেনে নেওয়া যায়?

মা, “তুমি নাই”
জগতের সবচেয়ে কঠোর, তিতা ও কষ্ট দায়ক এই কথাটা শুনলে বা ভাবলে, নিজের আত্মা বের হয়ে আসে।

তোমার আত্মীয়-স্বজন ও প্রতিবেশী-পরিচিত প্রায় প্রত্যেকেই তোমার পর্দানশীন, নম্র-ভদ্র, পরোপকারী ও ধর্মভীরু মানসিকতার সুনাম গেয়ে গেয়ে, অনেকে আবার হা-হুতাশ এমনকি বিলাপ করেও বুক ভাসায়, আমার মতো নরম মনের কয়েক জনের আহাজারিতে আকাশ-বাতাস ভারী হয়ে যায়। এখন তোমার দরদী ও তোমার বেহেস্তকামীর কোন অভাব নেই আর, শুধু তুমি নাই!

তোমার অসুখের তীব্রতায় কাতরানো দেখে, বারবার আমি কেঁদে দেওয়াতে, তুমি নিজের অসুস্থতায়ও মরা পরানে উল্টো আমার চোখের পানি মুছে, আমাকেই শান্তনা দিতে,

এখন তুমি নাই তাই লাগাতর বিলাপ করতে করতে মুর্ছা গেলেও তোমার বিকল্প কেউ নাই আমার।

তোমার শুন্যতায় আমার ভেঙ্গে পড়া দেখে, অনেকে আমাকে শান্তনার চিরন্তন বাণী শোনায়,
“সবাইকে একদিন চলে যেতে হবে, আস্তে ধীরে সব ঠিক হয়ে যাবে”।
কিন্তু দিন যতই যায়, তোমার বিরহ আরও বেড়ে যায়।
আমি বা আমরা কেউ ভাবিনি,
তুমি এত দ্রুত এভাবে চলে যাবে,
না ফেরার জগতে!

মা, তুমি পরপারে ভালো থাকো, খোদা তোমায় ভালো রাখবে, তোমার প্রতি আমরা পারিবারিক নগণ্য কয়জনের বাইরে অজস্র জনের প্রাণঢালা দোয়া আছে। আমরাও তোমার জন্য খোদার তরে দু’হাত তুলে কাঁদি।

মাগো, তুমি আজ রাতেই যেনো আসো আমার স্বপনে, প্রতি মুহূর্তেই তুমি অদৃশ্য হয়েও আমার পাশে থাকো আর ঘুমের চোখ মুদিলে যেনো তোমার দেখা পাই, আল্লাহর দোহাই।

তোমার বিরহে জর্জরিত আমার প্রায়ই ইচ্ছে করে,
তোমার কাছে চলে যেতে-পরপারে,
কখনো বা ইচ্ছে করে,
তোমার কবরের মাটি কুঁড়ে……. ।

[বেলাল আজাদ : লেখক ও সাংবাদিক]


আরো বিভন্ন নিউজ দেখুন