ফরিদুল মোস্তফা খান :
বছর ঘুরে বছর আসে।
কালের আবর্তে হারিয়ে যায় একটি বছর।
পুরাতনকে অনাদরে বিদায়, নতুনকে দু’ হাত পেতে গ্রহন করায় পৃথিবীর চিরন্তন নিয়ম।
সেই নিয়ম অনুসারে আজ পহেলা বৈশাখ ১৪৩২। বাংলাদেশী জাতিসত্তার ইতিহাস ও ঐতিহ্যের গুরুত্বপূর্ণ অংশ নববর্ষ উদযাপন।
বাংলা নববর্ষ বাংলাদেশীদের হৃদয়ে তার প্রকাশ অনন্য ভিন্নরুপ।
আমি এই উৎসবমূখর দিনে দেশ-বিদেশের সকল বাংলদেশী ভাই বোনদের জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা নিরন্তর ভালোবাসা ও অভিনন্দন।
আবহমানকাল ধরে নানা রূপ ও বৈচিত্র নিয়ে মানব জীবনে বার বার ঘুরে আসে পহেলা বৈশাখ।
নববর্ষের উৎসবের সাথে যেন ভরে ওঠা প্রকৃতি ও প্রাণের যোগ আবহমানকাল ধরে বিদ্যমান।
আমাদের হৃদয়ে সঞ্চারিত হয় স্বজাতির অতীত গৌরব ও ঐশ্বর্য।
আমাদের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য সুদুর অতীতকাল ধরে নির্মিয়মান বিশালত্ব এক শক্ত ভিত্তি লাভ করে।
ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও মনুষ্যত্বের বাণী একত্রিত হয়ে গঠন করে এক সুগ্রন্থিত জাতি।
জাতির আত্মপরিচয়ে পহেলা বৈশাখ এক উজ্জল উপাদান।
প্রতি বছর নববর্ষ পেছনের আলোকের দীপ্তিতে উৎকর্ষতা ও অগ্রগতির পথে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে প্রেরণা দেয়।
নানা ঘটন অঘটন গুজব ঘটনা ও দূর্ঘটনার সাক্ষী ১৪৩১ সাল অতিক্রম করে ১৪৩২ সালের প্রভাতে পৃথিবী দীর্ঘ বেলাভূমি কক্সবাজার থেকে সবাইকে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা।
স্বার্থের কারনে পৃথিবীর বিভিন্ন স্থান ভেসে যাচ্ছে রক্তর বন্যা-বিষ্ফোরণ।
লুন্ঠিত হচ্ছে মানবতা।
বিশ্বে শান্তি আনতে সমাধানহীন এক প্রহেলিকার মধ্যে থাকলে হবে না।
স্বার্থ কখনো মানুষের চুড়ান্ত সমাধান নয়।
যেকোনো বিষয়ে আমরা নি:স্বার্থ সমাধান চাইলে রক্ত ঝরবে না। সংঘাত সংঘর্ষ মনোমালিন্য হবেনা।
শান্তির জন্য অপেক্ষায় থাকতে হবে না।
করতে হবেনা সুখের সন্ধান।
আমাদের গত বছরের ক্লান্তি, হতাশা ও গ্লানিকে অতিক্রম করে নতুন উদ্যমে পুরোদমে এগিয়ে যেতে হবে।
বাংলা সন-তারিখ আমাদের প্রাত্যহিক জীবন, দৈনন্দিন অর্থনৈতিক কর্মকান্ডের অপরিহার্য অনুষঙ্গ।
তাই এটি জাতীয় সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ, বিদগ্ধজনের মানসিক আশ্রয় ও মননের পরিচর্যার উৎসস্থল।
সুপ্রাচীনকাল ধরে গড়ে ওঠা ভাষা ও কৃষ্টির নিবিড় বন্ধন ভেঙ্গে ফেলার জন্য বিদেশী আধিপত্যবাদী প্রভুরা অপসাংস্কৃতিক আধিপত্য বিস্তারের জন্য মহাপরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে চলেছে।
আমাদের এ সম্পর্কেও সচেতন ও সদা জাগ্রত থাকতে হবে।
ধর্মীয় নৈতিক এবং পারিবারিক রীতিমতো মানতে হবে।
নববর্ষের প্রথম দিনে আমি সকলের কল্যাণ ও শান্তি কামনা করছি।
বৈশাখের বহ্নিতাপে সমাজ থেকে মুছে যাক অসত্য, অন্যায়, অনাচার ও অশান্তি।
চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ুক শান্তির সুবাতাস।
, সুশীলা নদী – সাগর।
, জগৎ এর সকল প্রাণী সুখী হোক।
সুস্থ দেহ, সুস্থ মন, সুস্থ শরীর, প্রফুল্ল প্রশান্ত আত্মা
আর শান্তির বার্তা ছড়িয়ে পড়ুক বিশ্বের প্রতিটি ঘরে ঘরে।
মহান আল্লাহ সকলের সহায়ক হোক।
বন্ধ হোক বিবাদ বিশৃঙ্খলা অস্থিরতা অশ্নিলতা এবং রক্তপাত।
একটি বৈষম্যমীন সত্যিকার সোনার বাংলা চাই।
আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি…
এসো বৈশাখ এসো এসো।
১৪৩২ বাংলা সনের নতুন প্রভাতের প্রথম আলোতে আমি দেশবাসীকে আবারও জানাই নিরন্তর শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন।
শুভ নববর্ষ।