এছাড়া পত্রিকার বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠান কিংবা প্রতিনিধি সম্মেলন এবং বিভিন্ন অফিস মিটিংয়েও সম্পৃক্ত হওয়ার সুভাগ্য আমার হয়েছে। বিশেষ করে প্রতিনিধি সম্মেলনগুলোতে তিনি প্রতিনিধিদের হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকেন। আশ্চর্যের বিষয় হলো এসব অনুষ্ঠানে গিয়ে আমাকে কখনো সামনের সারিতে বসতে হয়নি। সম্পাদক মহোদয়ের পাশের চেয়ার খালী করে আমাকে বসিয়েছেন এবং সম্মান দিয়েছেন। এসব কারণে বুঝতে আর বাকি রইলনা যে তিনি আমাকে কতটা ভালোবাসেন। যাক বলতে চাচ্ছিলাম, দৈনিক সাঙ্গু ও একজন স্বপ্নসফল সম্পাদক জনাব কবির হোসেন সিদ্দিকীর কথা। আমরা নিরপেক্ষ নই, সত্যের পক্ষে-এ শ্লোগান নিয়ে ২০০২ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে অথ্যাৎ আজ থেকে ২২ বছর পূর্বে যুগসৃষ্টির উন্মাদনা নিয়ে প্রকাশ হতে যাওয়া আজকের জনপ্রিয় দৈনিক সাঙ্গু পত্রিকাটি মাসিক সাঙ্গু হিসেবে পথচলা শুরু করে। পরবর্তীতে পত্রিকাটি রুপ পায় পাক্ষিক হিসেবে। দীর্ঘ পথ পরিক্রমার পর ঠিক ১৪ বছর পূর্বে সাঙ্গু পত্রিকাটি সম্পাদক মহোদয়ের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় বৃহত্তর চট্টগ্রামের গণমানুষের প্রিয় দৈনিক হিসেবে নিয়মিত এবং ধারাবাহিক প্রকাশ অব্যাহত রেখে পাঠক সমাজের মাঝে স্থান দখল করে নেয়। শুরুতে র্দূদান্ত সাহসী সম্পাদক কবির হোসেন সিদ্দিকী একঝাঁক সংবাদ কর্মি সঙ্গে নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন বস্তুনিষ্ঠ তথ্যবাণিজ্যের এক চ্যালেঞ্জিং পেশায়।
সাফল্যের স্বর্ণশিখরে পৌঁছে প্রমাণ করে দিয়েছেন সংগ্রামী মানুষ সফল হতেই জানে, হারতে জানে না। তাঁর পথ চলা ছিল বস্তুনিষ্ঠতার, তার পথ দুর্নীতি স্বজনপ্রীতি, আত্মপ্রচারের বিরুদ্ধে। দৈনিক সাঙ্গু সম্পাদক কবির হোসেন সিদ্দিকী একজন মাঠ পর্যায়ের সাংবাদিক ছিলেন। এর আগে তিনি স্যাটেলাইট টেলিভিশন চ্যানেল আইসহ বিভিন্ন পত্রিকায় সুনামের সহিত কাজ করেছেন। এ কারণেই তিনি মাঠের এবং মফস্বল সাংবাদিকদের মূল্যায়ন করেন বেশী। প্রতিনিধির পাঠানো কোনো সংবাদই তিনি ফেলে দেননি। প্রয়োজনে ওই রিপোর্টটিতে ভূল থাকলে তিনি নিজে ঠিক করে দিয়েছেন। এই পত্রিকায় কাজ করতে যারা আসেন, তাদের প্রথমেই তিনি সম্পাদকীয় নীতি সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা দেন। বলা চলে, তিনি একজন সফল সম্পাদক। দৈনিক সাঙ্গুর পাশাপাশি তিনি প্রতিষ্ঠা করেছেন ঢাকা থেকে প্রকাশিত জাতীয় দৈনিক বায়ান্ন, দৈনিক সাম্পান পত্রিকাও। এতে করে চট্টগ্রামসহ সারাদেশে অনেক বেকার সাংবাদিকদের কর্মসংস্থানের সুযোগ হয়েছে। আগামী ২০২৫ সালের পহেলা ফেব্রুয়ারি দৈনিক সাঙ্গু ২১ বছর পেরিয়ে ২২ বছরে পর্দাপণের মধ্যদিয়ে গৌরবদীপ্ত ইতিহাস সৃষ্টি করবে। এই সূদীর্ঘ পথচলায় দৈনিক সাঙ্গু কখনো আধুনিকতার নামে সস্তা পাঠক প্রিয়তার পথে পা বাড়ায়নি। তাই দৈনিক সাঙ্গু আজ পাঠকনন্দিত। জনাব কবির হোসেন সিদ্দিকী পত্রিকাটির সম্পাদক ও প্রকাশক।
তাঁর সম্পাদনায় প্রকাশিত দৈনিক সাঙ্গু চট্টগ্রামের বুকে জন্ম দিয়েছে বহু সাংবাদিক, সাহিত্যিক, কবি ও গবেষককে-যাঁরা এই পত্রিকায় লেখালেখির মাধ্যমে তাঁদের প্রতিভার বিকাশ ঘটিয়েছেন। শুরু থেকেই দৈনিক সাঙ্গু এতদঞ্চলের জনমানসে রাজনৈতিক স্বাধিনতা, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক মুক্তি অর্জনের স্পৃহাকে অদম্য জাতীয়তাবাদী চেতনার আলোকে জাগিয়ে তুলতে ও বিকশিত করার ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে চলেছে। প্রতিযোগীতার বাজারে ২২ বছর পাঠক প্রিয়তা ধরে রেখে টিকে থাকা অত্যন্ত কষ্টকর হলেও দৈনিক সাঙ্গু’র পাঠক প্রিয়তা দিনদিন বেড়েই চলেছে। সেই সাথে বাড়ছে পত্রিকার প্রচার সংখ্যাও। যুক্তিনিষ্ঠ, প্রগতিশীল, গণতান্ত্রিক এবং নিরপেক্ষভাবে দীর্ঘ বছর ধরে সংবাদ প্রকাশের ক্ষেত্রে পত্রিকাটির অবস্থান। তাই দৈনিক সাঙ্গু আজ পাঠক সমাজে সমাদৃত। পত্রিকাটির নামকরণের পেছনেও রয়েছে লম্বা এক ইতিহাস।
খরস্রোতা সাঙ্গু নদীর নামের আদলেই দৈনিক সাঙ্গুর নামকরণ হয়। দেখতে দেখতে ২১ বছর পেরিয়ে ২২ বছরে অসীম সাহসিকতার সাথে পা রাখতে যাচ্ছে দৈনিক সাঙ্গু। জনপ্রিয় এই পত্রিকাটির প্রকাশক-সম্পাদক জনাব কবির হোসেন সিদ্দিকীর সম্পাদনায় প্রকাশিত দৈনিক সাঙ্গু শুরু থেকেই সমগ্র চট্টগ্রামের উন্নয়ন তথা এতদঞ্চলের মানুষের সুখ-দুঃখ ও সমস্যা-সম্ভাবনা নিয়ে ধারাবাহিকভাবে সাহসী প্রতিবেদন প্রকাশ করে চলেছে। কখনো রক্তচক্ষুকে ভয় করেন নি তিনি। বরং পত্রিকাটি জনগণের পক্ষে অত্যন্ত বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করে চলেছে সাহসীকতার সহিত। আমরা দেখেছি, বানিজ্যিক রাজধানীখ্যাত বন্দরনগরী চট্টগ্রামের উন্নয়ন, অর্থনীতি-সমাজনীতিসহ বিভিন্ন ইস্যুতে দৈনিক সাঙ্গু অত্যন্ত প্রয়োজনীয়, গুরুত্বপূর্ণ ও সাহসী কথা বলে এবং দৃঢ়তার সঙ্গে বলে। পাঠক সমাজ এবং জনগণ যে ভাষা পছন্দ করে দৈনিক সাঙ্গু ঠিক সেই ভাষাতেই কথা বলে- পত্রিকাটির অনেক প্রতিবেদন, সম্পাদকীয় ও উপ-সম্পাদকীয়তেও এটি আমরা লক্ষ্য করেছি। সবচাইতে বড় কথা হলো, পত্রিকাটিতে স্বাধীনভাবে লেখা যায়, যা উৎসাহব্যঞ্জক। একটি সংবাদপত্রকে তার সাহসী ভূমিকা দিয়েই মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্যতা অর্জন করতে হয়। যা দৈনিক সাঙ্গু করতে পেরেছে বলে আমাদের বিশ্বাস। সম্পাদকীয় নীতির যে সূচনা দৈনিক সাঙ্গুতে প্রতিদিন পরিস্ফুটিত হয় নিঃসন্দেহে এই পত্রিকার সম্পাদক তার প্রশংসার দাবী রাখে।
দীর্ঘ পথপরিক্রমায় সাংবাদিক, প্রকাশক ও সম্পাদক প্রিয় কবির হোসেন সিদ্দিকী সাহেবের সাথে আমার পরিচয় ঘটে বহু বছর পূর্বে। তখন আমি ঢাকা থেকে প্রকাশিত জাতীয় দৈনিক ভোরের ডাক পত্রিকার চট্টগ্রামের ষ্টাফ রির্পোটার এবং প্রিয় কবির হোসেন সিদ্দিকী ভাইও চট্টগ্রামের একটি দৈনিকের তুখোড় সাংবাদিক ছিলেন। সেই সুবাদে খুব কাছথেকে তাকে যতটুকু দেখেছি, তা হলো, কবির হোসেন সিদ্দিকী সাহেব মানুষ হিসেবে একজন অত্যন্ত সদালাপী, স্বচ্ছ, ধার্মিক, নিরঙ্কার ও সহজ-সরল এবং সাদা মনের মানুষ। তাঁর সূ-পরিচালনায় এবং ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় দৈনিক সাঙ্গু আজ চট্টগ্রাম তথা এতদঞ্চলের গণমানুষের প্রিয় পত্রিকা হিসেবে ব্যাপক জনপ্রিয়তা আর পাঠক প্রিয়তা অর্জন করেছে। এর পেছনের রহস্য একটিই প্রতিষ্ঠার পর থেকেই দৈনিক সাঙ্গু প্রতিদিন সাধারণ মানুষের তথ্য এবং চাহিদা পূরণে যে প্রশংসনীয় ভূমিকা রেখে চলেছে ঠিক সেটি এখনো ধরে রেখেছে। বন্দরনগরী চট্টগ্রামসহ সব দেশের সংবাদ এবং সংবাদের বিশ্লেষণ দৈনিক সাঙ্গুতে প্রকাশ পাচ্ছে। এছাড়া এ পত্রিকার সম্পাদকীয় ও অন্যান্য নিবন্ধে দেশ-বিদেশের সঠিক চিত্রও প্রতিফলিত হয়। এক কথায় পথচলার দীর্ঘ ২২ বছরে কখনো পক্ষপাতমূলক সাংবাদিকতা করেনি দৈনিক সাঙ্গু। দৈনিক সাঙ্গু ও একজন স্বপ্নসফল সম্পাদক জনাব কবির হোসেন সিদ্দিকী’র এই পথচলা অব্যাহত থাকুক। এমনটা প্রত্যাশা আমাদের।
লেখক: মো. এনামুল হক লিটন, সাংবাদিক ও প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, প্রগতিশীল সংবাদপত্র পাঠক লেখক ফোরাম, কেন্দ্রিয় কমিটি। চট্টগ্রাম-১৭ নভেম্বর’২৪