• শনিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৪:৩৩ অপরাহ্ন
সর্বশেষ খবর
কক্সবাজারে পাহাড় ধস : পৃথক ঘটনায় মা-শিশুসহ ৬ জনের মৃত্যু বৃষ্টি বিপর্যস্ত কক্সবাজার,হোটেল কক্ষে বন্দি পর্যটকরা; পাহাড় ধসে দুই পরিবারের ছয়জনের মৃত্যু এখন থেকে কক্সবাজারে কোনো পুলিশকে ঘুষ দিতে হবে না: নবনিযুক্ত এসপি কুতুবদিয়ার শীর্ষ ডাকাত শাহরিয়া অস্ত্র সহ আটক ১০ম গ্রেডে বেতনের দাবীতে কক্সবাজার সার্ভে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের স্মারকলিপি প্রদান হুইপ কমলের বিরুদ্ধে মিথ্যা তথ্য প্রচার না করার দাবী অনুসন্ধানী সাংবাদিকতায় স্বর্ণপদকসহ চার সাংবাদিককে সম্মাননা দিবে বনেক ত্রিশালে অন্তঃসত্ত্বা নারীর ওপর হামলা কক্সবাজারের নতুন ডিসি সালাউদ্দিন আহমেদ বন্যার্তদের সেবায় নিঃস্বার্থ পেশাগত দায়িত্ব ও মানবিকতার দৃষ্টান্ত স্থাপনকারী দুই সেনা  সদস্যের সাথে সাক্ষাৎ করলেন সেনাবাহিনী প্রধান

চিকিৎসার জন্য বিদেশ যেতে প্রস্তুতি খালেদা জিয়ার

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
আপডেট : বুধবার, ৭ আগস্ট, ২০২৪
Oplus_131072

বাণী ডেস্ক :


ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর অবশেষে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। সাড়ে ছয় বছর পর রাষ্ট্রপতির আদেশে মুক্ত হন সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী। মুক্তির পর খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার প্রস্তুতি চলছে।

রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিনের সঙ্গে তিন বাহিনী প্রধানগণ, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের বৈঠকে সর্বসম্মত সিদ্ধান্তে তাঁকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার বঙ্গভবনের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়। অবশ্য করোনা পরিস্থিতির সময় থেকে শর্তসাপেক্ষে জামিনে মুক্ত ছিলেন তিনি। এ সময় তিনি বাসভবনে থাকা ও দেশের হাসপাতালে চিকিৎসার অনুমতি পেয়েছিলেন। গতকাল মুক্তির পর রাতে এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, ১ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন ও বিভিন্ন মামলায় গ্রেপ্তার ও আটকদের মুক্তি দেওয়া শুরু হয়েছে। এরই মধ্যে অনেকে মুক্তি পেয়েছেন।এদিকে খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে মঙ্গলবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগ থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার দণ্ড মওকুফপূর্বক মুক্তির বিষয়ে আইন ও বিচার বিভাগ, আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মতামতের আলোকে সংবিধানের ৪৯ অনুচ্ছেদ প্রদত্ত ক্ষমতাবলে রাষ্ট্রপতি বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট হাইকোর্ট বিভাগের ক্রিমিনাল আপিল নং-১৬৭৬/১৮ (বিশেষ আদালত নং-৫ ঢাকা-এর বিশেষ মামলা নং ১৭/২০১৭ থেকে উদ্ভূত) এবং বিশেষ আদালত নং-৫, ঢাকা-এর বিশেষ মামলা নং-১৮/২০১৭-এ প্রদত্ত দণ্ডাদেশ মওকুফপূর্বক নির্দেশক্রমে মুক্তি প্রদান করা হলো।

গত ৮ জুলাই থেকে খালেদা জিয়া রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। অসুস্থ খালেদা জিয়া এর আগে এভারকেয়ার হাসপাতালে ১০ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর ২ জুলাই গুলশানের বাসায় ফেরেন। গত ২৫ জুন একই হাসপাতালে তাঁর হৃদযন্ত্রে পেসমেকার বসানো হয়। এ ছাড়া সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর হার্টে তিনটি ব্লক ছিল। একটিতে রিং পরানো হয়।

৭৯ বছর বয়সী খালেদা জিয়া আর্থ্রাইটিস, হৃদরোগ, ফুসফুস, লিভার, কিডনি, ডায়াবেটিসসহ বিভিন্ন জটিলতায় ভুগছেন। এর আগেও গত ২ মে খালেদা জিয়াকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ওই সময় চিকিৎসকরা তাঁকে সিসিইউতে রেখে দু’দিন চিকিৎসা দিয়েছিলেন। তারও আগে গত বছরের ৯ আগস্ট খালেদা জিয়াকে ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। তখন পাঁচ মাসের বেশি সময় চিকিৎসা শেষে গত ১১ জানুয়ারি তিনি বাসায় ফেরেন। লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত বিএনপি চেয়ারপারসনের রক্তনালিতে অস্ত্রোপচার করা হয় গত বছরের ২৭ অক্টোবর। যুক্তরাষ্ট্র থেকে তিনজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক এনে খালেদা জিয়ার রক্তনালিতে অস্ত্রোপচার করা হয়েছিল। তাঁর স্বাস্থ্য কিছুটা স্থিতিশীল হলে সে দফায় পাঁচ মাসের বেশি সময় পর তাঁকে বাসায় নেওয়া হয়েছিল।তাঁকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নিতে বিএনপি বরাবরই দাবি জানিয়ে আসছে। এর আগেও পরিবারের পক্ষ থেকে কয়েক দফা আবেদন করা হয়েছিল, কিন্তু তা নাকচ করে দেয় সরকার।গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ম্যাডাম খুব অসুস্থ। আমি গতকাল রাতে দেখা করেছি। সুতরাং যখনই তিনি ফিট মনে করবেন, সুস্থবোধ করবেন, তখন তিনি জনগণের সামনে উপস্থিত হবেন।

দলীয় সূত্র জানায়, আপাতত বিএনপি চেয়ারপারসনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়ার কার্যক্রম শুরু হবে। তাঁর ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেন, ‘ম্যাডাম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল রয়েছে। মেডিকেল বোর্ড যখন সিদ্ধান্ত দেবেন, তখন হাসপাতাল থেকে বাসায় যাবেন।’দুর্নীতির দুই মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়ে খালেদা জিয়া ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি কারাবন্দি হন। দুই বছরের বেশি সময় কারাবন্দি ছিলেন সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী।

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় ১৭ বছরের সাজাপ্রাপ্ত সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে করোনা মহামারির মধ্যে ২০২০ সালের ২৫ মার্চ সরকারের নির্বাহী আদেশে সাজা স্থগিত করে দুটি শর্তে মুক্তি দিয়েছিল সরকার। শর্তমতে, খালেদা জিয়া ঢাকার নিজ বাসায় থেকে চিকিৎসা নেবেন এবং এই সময়ে তিনি দেশের বাইরে যেতে পারবেন না। এর পর ছয় মাস পরপর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তাঁর সাজা স্থগিত করে এ পর্যন্ত আটবার মুক্তির মেয়াদ বাড়ায় সরকার। তবে সাজা স্থগিতের সময় তাঁর স্বাভাবিক চলাচল ছিল না। সর্বশেষ গত ২৭ মার্চ খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিত করে মুক্তির মেয়াদ ফের ছয় মাস বাড়ানো হয়।

খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ জামায়াত আমিরের

এদিকে সোমবার রাতে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। এ সময় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস উপস্থিত ছিলেন। সূত্রমতে, চলমান পরিস্থিতি ও বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিনের সঙ্গে বৈঠক সম্পর্কে খালেদা জিয়াকে অবহিত করেছেন নেতারা।


আরো বিভন্ন নিউজ দেখুন

ই-পেপার