নিজস্ব প্রতিবেদক-
টেকনাফ সদর ইউনিয়নের নাজির পাড়া এলাকার মৃত এজাহার মিয়ার পুত্র নুরুল হক ভুট্টো’র নৃশংস হত্যাকান্ডে জড়িত আসামীদের বিরোদ্ধে চার্জ গঠন করেছে আদালত।
গত ২৩ এপ্রিল কক্সবাজার অতিঃ জেলা ও দায়রা জজ মহিউদ্দীন মুরাদের আদালত এ চার্জ গঠন করেন । ১৭ জন এজাহার নামীয় আসামীসহ মোট ২৪ জনের বিরোদ্ধে অভিযোগ আনেন আদালত। এসব আসামীদের ১৪ জনই পলাতক রয়েছে।
এসময় মামলার বাদী নুরুল ইসলাম আদালতে উপস্থিত ছিলেন।বাদী অভিযোগ করেন, আসামীরা হুমকি দিচ্ছে। হত্যাকান্ডের মূল হোতারা এখনো ধরাছোঁয়ার বাহিরে। তারা প্রতিনিয়ত মামলা প্রত্যাহার করার জন্য ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। মামলা আপোষ করার জন্য বাদীকে ৫ কোটি টাকা ও ২২ কানি জমি দেয়ার প্রস্তাব দিয়েছে আসামীরা। এভাবে নানাভাবে আপোষের জন্য চাপ দিচ্ছে তারা। তাদের অনৈতিক প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় আসামীরা বাদীকে বিভিন্ন মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে হয়রানি করছে। পলাতক আসামীদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবী জানান বাদী।
দীর্ঘ তদন্ত শেষে তদন্ত কর্মকর্তা এসএম রউফ বুলবুল আদালতে চার্জশীট প্রদান করেন।
অভিযোগ পত্র থেকে জানা যায়,
নাজিরপাড়ার নুরুল হক ভুট্টাে ও তার স্বজনরা ২০২২ সালের ১৫ মে বিকালে সাবরাং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এর বাড়ি থেকে একটি ঘরোয়া বিচার শেষ করে নিজ বাড়িতে আসার পথে সদর ইউপির বড় হাবির পাড়া থানার পুকুর এলাকা সংলগ্ন জামে মসজিদের পাশে টেকনাফ সাবরাং সড়কের উপর পৌঁছলে একরামের নেতৃত্বে মধ্যযুগীয় কায়দায়
তাকে হত্যা করা হয়।
গত ২০২১ ইউপি নির্বাচনের পরাজয়ের শত্রুতার জের ধরে এলাকার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত শীর্ষ ইয়াবা গডফাদার ও বহু মামলার পলাতক আসামি সন্ত্রাসী একরাম বাহিনীর প্রধান একরাম ডাকাত ও আব্দুর রহমান গং প্রকাশ্যে দ্বিবালোকে মধ্যযুগীয় কায়দায় নিহত নুরুল হক ভুট্টো ও তার সাথে থাকা আত্মীয় স্বজনদের পথ গতিরোধ করে পরিকল্পিতভাবে অবৈধ অস্ত্র-সস্ত্রে সজ্জিত হয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা করে।
এসময় নুরুল হক ভুট্টো প্রাণ রক্ষার জন্য পাশের একটি মসজিদে ঢুকে পড়লে সন্ত্রাসীরা মসজিদের দরজা জানালা ভেঙে প্রবেশ করে তাদের হাতে থাকা ধারালো অস্ত্র দিয়ে উপর্যপুরি কোপ মেরে ডান পা বিচ্ছিন্ন করে নৃশংস হত্যাযজ্ঞে মেতে উঠে এবং অপরাপর সঙ্গীদের মারাত্মক রক্তাক্তভাবে জখম করে। নুরুল হক ভুট্টোকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নেয়ার পথে মৃত্যুর কূলে ঢলে পড়ে ভুট্টো।
এ ঘটনায় ভুট্টোর ছোট ভাই নুরুল ইসলাম নুরু বাদী হয়ে টেকনাফ মডেল থানায় গত ২০২২ সালের ১৬ মে ১৭ জন এজাহারভূক্ত ও অজ্ঞাতনামা ৮/১০ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নং-৪৭/৪৪০। উক্ত ঘটনার পর থেকে আসামি পক্ষ নিহত বাদী ও নিহত ভূট্রোর আত্মীয় স্বজনদের উপর বিভিন্নভাবে হুমকি ধমকিসহ হামলা ও মিথ্যা মামলার ভয়ভীতি প্রদর্শন করে আসছে। বলতে গেলে ভুট্টোর স্বজনরা দিশেহারা । এমতাবস্থায় আসামীদের কালো টাকায় অসহায় হয়ে পড়েছে নিহত ভুট্টোর পরিবার ও স্বজনরা। সব শঙ্কার মাঝে বিচারের পথ খোঁজে পেল ভূট্টো হত্যা মামলা।