হাসিনা মোস্তফা খান :
জেলা প্রশাসক মোঃ শাহীন ইমরান কোন রকম আনুষ্ঠানিকতা ছাড়া ১৬ ই মার্চ ২০২৪, খুরুশকুল সরকারি বিশেষ আশ্রয়ণ প্রকল্প এ আশ্রিত জলবায়ু উদ্বাস্তু নারীদের জন্য স্থানীয় বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা পাল্স কর্তৃক পরিচালিত বিকল্প জীবিকায়ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র পরিদর্শন এবং প্রশিক্ষণার্থীদের সাথে মতবিনিময় করেন। সকাল ১১:৩০ মিনিটে জেলা প্রশাসক পাল্স প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে পৌঁছালে প্রশিক্ষণার্থীগণ জেলা প্রশাসককে ফুল দিয়ে স্বাগত জানান।
এ সময় পাল্স এর প্রতিষ্ঠাতা এবং অবৈতনিক নির্বাহী পরিচালক আবু মোরশেদ চৌধুরী খোকা, ১নং ওয়ার্ড কমিশনার আকতার কামাল সহ পাল্স এর বিভিন্ন কর্মকর্তা কর্মচারীগণ উপস্থিত ছিলেন। প্রকল্প সমন্বয়কারী মোঃ খায়রুল আলম জেলা প্রশাসককে চলমান প্রকল্পের বিস্তারিত বর্ণনা করেন। পরবর্তীতে জেলা প্রশাসক জলবায়ু উদ্বাস্তু নারীদের তৈরি বাটিক-বুটিক, এমব্রয়ডারি সহ সেলাইকৃত কাপড়ের প্রদর্শনী দেখেন। এ সময় জেলা প্রশাসককে প্রশিক্ষণার্থীদের তৈরি হাতের কাজের স্মরণিক উপহার দেয়া হয়।
পাল্স ডিসেম্বর ২০২২ সাল থেকে আন্তর্জাতিক সংস্থা মাল্টেজার ইন্টারন্যাশনাল এর সহযোগিতায় পাইলট প্রকল্পের আওতায় খুরুশকুল সরকারি বিশেষ আশ্রয়ণ প্রকল্পে আশ্রিত জলবায়ু উদ্বাস্তু নারীদের বিকল্প জীবিকায়নের মাধ্যম হিসেবে বাজার চাহিদা ভিত্তিক হস্ত ও সেলাই প্রশিক্ষণ কার্যক্রম শুরু করে। বর্তমানে প্রথম ধাপে একশত জন নারী বিভিন্ন ট্রেড এ প্রশিক্ষণ শেষে পণ্য-সামগ্রী তৈরীতে নিয়োজিত। একই প্রকল্প এর আওতায় চৌফলদন্ডী ইউনিয়নের উপকূলে বসবাসরত সমুদ্র নির্ভর রাখাইন নারীসহ ১১০ জনকে একই প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে।
জেলা প্রশাসক এর সাথে মতবিনিময় কালে আশ্রয়ণ প্রকল্পের প্রশিক্ষণার্থী খাইরুন নেছা তাদের উৎপাদিত পণ্য-সামগ্রী প্রদর্শন বিপণন এর জন্য শহরে বীচ সংলগ্ন এলাকায় একটি জলবায়ু উদ্বাস্তুদের তৈরি পণ্যের প্রদর্শনী কেন্দ্র স্থাপন করার জন্য জেলা প্রশাসকের দৃষ্টি আকর্ষণ করলে জেলা প্রশাসক উনার বক্তব্যে বলেন পণ্য প্রদর্শন এবং বিপণন কেন্দ্র বিষয়টি অতি গুরুত্বপূর্ণ এবং উনি তা আমলে নিয়েছেন। জেলা প্রশাসক পাল্স এর এই সময়োপযোগী উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, বর্তমান সরকারের জলবায়ু উদ্বাস্তুদের জন্য নির্মিত বিশেষ আশ্রয়ণ প্রকল্পের অবকাঠামো বিশ্বে নজিরবিহীন। জলবায়ু উদ্বাস্তু নারীদের ক্ষমতায়নে জেলা প্রশাসনের সহযোগিতা সব সময় অব্যাহত থাকবে। প্রত্যেক নারীকে নিজ নিজ আর্থিক সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য এই প্রশিক্ষণকে কাজে লাগাতে হবে। ২০৪১ সালে উন্নত বাংলাদেশ বিনির্মাণে মূল-দেশজ উৎপাদনে নারীদের অবদান গুরুত্বপূর্ণ বলে জেলা প্রশাসক মোঃ শাহীন ইমরান তার বক্তব্যে উল্লেখ করেন।
তিনি আরও বলেন সরকারি বিশেষ আশ্রয়ণ প্রকল্প একটি জাতীয় সম্পদ, যারা এখানে ফ্ল্যাট এ আছেন সকলের দায়িত্ব পরিবেশ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা। যত্রতত্র ময়লা আবর্জনা, প্লাস্টিক ফেলা থেকে বিরত থাকা। প্রয়োজনে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদকে ময়লা আবর্জনা অপসারণে সম্পৃক্ত করা যেতে পারে। তিনি উপস্থিত মায়েদের উদ্দেশ্য বলেন- শিক্ষার কোন বিকল্প নেই, প্রতিটি শিশুকে স্কুলে পাঠাতে হবে। জেলা প্রশাসক পাল্স অবৈতনিক নির্বাহী পরিচালক আবু মোরশেদ চৌধুরীকে উদ্দেশ্যে করে বলেন, উনি দেশের সর্বোচ্চ ব্যবসায়িক সংগঠন এফবিসিসিআই-এর পরিচালনা পর্ষদ এর একজন সদস্য, পাশাপাশি একজন মানবিক সমাজ কর্মী। উনার বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যবসায়িক সম্পৃক্ততাকেও আপনারা কাজে লাগিয়ে উৎপাদিত পণ্যের বাজার সংযোগ স্থাপন করতে পারেন। আবু মোরশেদ
চৌধুরী খোকা জেলা প্রশাসকের কাছে আশ্রয়ণ প্রকল্পে আশ্রিত নারী-পুরুষ নির্বিশেষে বেকার যুব সমাজকে বাজার চাহিদা ভিত্তিক প্রশিক্ষণ প্রদানের জন্য একটি প্রশিক্ষণ-কেন্দ্র স্থাপনের জায়গার জন্য সহযোগিতা কামনা করেন। যাতে সারা বছর আশ্রয়ণ প্রকল্পের বিভিন্ন স্তরের লোকজন আয়বর্ধক প্রশিক্ষণ এবং দক্ষতা অর্জনের মাধ্যমে নিজেদের স্বাবলম্বী ও জাতীয় অর্থনীতিতে অবদান রাখতে পারে