• শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ০৯:৫৫ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ খবর
প্রধান বিচারপতিকে পিপির ফুলেল শুভেচ্ছা খুনি ওসি প্রদীপের হাতে নির্যাতিত সাংবাদিকের আহাজারি, প্রধান বিচারপতির হস্তক্ষেপ কামনা বিচার বিভাগের ইতিহাসে নতুন রেকর্ড, প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান সহ ১৩ বিচারপতির কক্সবাজার সফর এসপি কক্সবাজারের সংবাদ সম্মেলন : বিপুল অস্ত্রশস্ত্র ও গোলাবারুদ সহ ৫ ডাকাত আটক আল্লাহর আদেশ নিষেধ না মানলে করুন পরিনতি : হুইপ সাইমুম সারওয়ার কমল কুতুবদিয়ায় প্রাতিষ্ঠানিক ডেলিভারি নিশ্চিত করনে ইউনিয়ন পরিবার পরিকল্পনার সভা অনুষ্ঠিত ছোট মহেশখালী রাহাতজান পাড়া জামে মসজিদের মাইক চুরি জিপিএ-৫ অর্জনে উপজেলা পর্যায়ে শীর্ষস্থানে আবারও কুতুবজোম দাখিল মাদ্রাসা ইউরোপ প্রবাসী মাদক ব্যবসায়ী রফিক হায়দার ও মোর্শেদের কল রেকর্ড ফাঁস লোহাগড়ায় আ.লীগ নেতা মল্লিকপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল গুলিতে নিহত

শুদ্ধ সঙ্গীত হৃদয়ের অন্ধকার দূর করে দেয়

নিজস্ব প্রতিবেদক:
আপডেট : রবিবার, ১০ মার্চ, ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক :


আমিরুল মোমেনীন মানিক। জীবনমুখী গান নিয়ে কাজ করছেন দেড়যুগ ধরে। এই সময়ের মধ্যে গান নিয়ে নানা সময়ে আলোচনায় এসেছেন।  কিংবদন্তি কণ্ঠশিল্পী নচিকেতা চক্রবর্তীর সঙ্গে মানিকের বিভিন্ন সময়ে প্রকাশিত ‘আয় ভোর’, ‘নীল পরকীয়া’ এবং ‘সকাল হবে কি?’- তিনটি গানই আলোচনায় এসেছে। ‘মা যে দশ মাস দশ দিন’ মানিকের বিপুল আলোচিত গান। বাংলাদেশের শীর্ষ শিল্পীদের অনেকেই গেয়েছেন তার লেখা ও সুরের গান। গানের জন্য তিনি পেয়েছেন জাতীয় জাদুঘর সম্মাননা। দেশের বাইরে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, আসাম ও ত্রিপুরাসহ বিভিন্ন রাজ্যে তার গানের শুভাকাঙ্ক্ষী রয়েছে। শিল্পী আমিরুল মোমেনীন মানিক কথা বলেছেন সংগীতসহ ক্যারিয়ারের বিভিন্ন বিষয়ে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন ফয়সাল রাব্বিকীন।

কেমন আছেন? ব্যস্ততা কেমন যাচ্ছে?-ব্যস্ততা মানুষকে বিভ্রান্তির পথ থেকে দূরে রাখে।

 

সেই হিসেবে তুমুল ভালো কাটছে চলতি সময়।

সদ্য বইমেলা শেষ হলো। সেখানে আপনার বই ‘নিষিদ্ধ গান বিশুদ্ধ বাদ্য’ প্রকাশ হয়েছিল। কেমন সাড়া মিলেছে? -এটা গান বিষয়ক বই। অনেকদিনের স্বপ্ন ছিল নিজের সাংগীতিক অভিজ্ঞতা নিয়ে এরকম একটি বই করবো। বইটি সংগীতসংশ্লিষ্ট সবার জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। গান-বাদ্য নিয়ে জায়েজ-নাজায়েজের তর্কবিতর্কের পোস্টমর্টেম করা হয়েছে এখানে। বইটির ভূমিকার দু-একটি লাইন এখানে তুলে ধরছি: তবে কি সংগীতের সঙ্গে বাংলাদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের বিশ্বাসের বিরোধ চলবেই? প্রচণ্ড তত্ত্ব তালাশ, বহুবিভাজিত মতামত, বিধিনিষেধের ঘেরাটোপে অনেকে বিশ্বাসে পদাঘাত করে গড্ডালিকায় ভেসে যাচ্ছেন। অনেকে আবার বিভাজন আর বহুমতের মধ্যে খুঁজছেন ঐক্য ও ইতিবাচকতা।

লেখালেখি নিয়ে কি ভাবনা? বিষয়বস্তু কীভাবে নির্বাচন করেন বইয়ের? -ইতিমধ্যে আমার ২৩টি বই বেরিয়েছে। বইগুলোর একেকটার একেকরকম বিষয়। নামগুলোও অদ্ভুত। যেমন ধরুন: বিশ্ববিদ্যালয়ের কতিপয় স্টুপিড শিক্ষক, ব্লাডি জার্নালিস্ট, আরতুগ্রুল বাঙালি। পাঠককে কী বলতে চাই, মূলত সেই ভাবনা থেকে বিষয়বস্তু আসে, এরপর চলে নির্মাণের কাজ।

আপনি একজন সংগীতশিল্পী, সুরকার, সাংবাদিক, লেখক, উপস্থাপক। বাংলাদেশের প্রথম ইউটিউব জার্নালিজমের প্ল্যাটফরম চেঞ্জ টিভি ডট প্রেসের প্রতিষ্ঠাতা আপনি। বর্তমানে হামদর্দ বাংলাদেশের তথ্য ও গণসংযোগ বিভাগের পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এরমধ্যে আপনি নিজেকে কোন পরিচয় দিতে সবচেয়ে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন এবং কেন? এতকিছু একসঙ্গে সামলান কীভাবে?-প্রত্যেকটা কাজের সঙ্গেই মানুষের কল্যাণের বিষয় সম্পৃক্ত। ভালো লাগে এইসব মানবিক কাজের মধ্যে ডুবে থাকতে। সুতরাং সব পরিচয়কেই আমি দারুণভাবে উপভোগ করি। প্রত্যেক কাজের জন্য সময় ভাগ থাকে বলে সামলাতে সমস্যা হয় না।

 

আপনার গানে সমসাময়িক অনিয়ম ও বাস্তবতার কথা ফুটে উঠে। গানের কথায় এসব বিষয়কে গুরুত্ব দেয়া হয় কেন?

-একটা গান তখনই সফল হয়, যখন তা সময়কে ধারণ করতে পারে। গানের ভাষায় জীবনের গলি ঘুপচিতে আলো ফেলার চেষ্টা করি সবসময়। আমি মনে করি, সংগীত হলো সমাজকে ইতিবাচক পথে নেবার আলোঘর। অথবা এটাকে চকচকে তলোয়ার বলতে পারেন, যা নিরন্তরভাবে মানুষের হৃদয়ের এবং পাশাপাশি সমাজের অন্ধকারকে কেটে কুচিকুচি করে দেয়। একটা সুন্দর সমাজের প্রধান অনুঘটক হচ্ছে সুন্দর হৃদয়ের মানুষ। গানের কথা ও সুরের শুদ্ধতা দিয়ে আমি পরিশুদ্ধ হৃদয়ের মানুষ তৈরি করতে চাই, যারা মানবিক সমাজ তৈরি করতে ভূমিকা পালন করবেন।

 

ওপার বাংলার খ্যাতিমান শিল্পী নচিকেতার সঙ্গে আপনার সখ্যতা রয়েছে। পাশাপাশি একসঙ্গে বেশ কিছু গানের গল্প রয়েছে। এটা কীভাবে হলো?-নচিকেতা চক্রবর্তী, জীবনমুখী বাংলা গানের তুখোড় কিংবদন্তি। তার সঙ্গে কাজ করবো, এটা আমার শৈশবের স্বপ্ন ছিল। আজ থেকে দেড় দশক আগে গান পাঠিয়েছিলাম দাদাকে। গান পাঠাবার দু’বছর পর নচি দা নিজেই একদিন ফোন করলেন। আমি চমকে উঠলাম। বললেন, রেডি হও, ঢাকায় আসছি, তোমার গান গাইবো। এভাবেই তৈরি হলো ‘আয় ভোর’। এরপর থেকে পথচলা শুরু। এই সময়ে মধ্যে নচি দা’র মাধ্যমে যেমন আমি ভীষণভাবে অনুপ্রাণিত হয়েছি, তিনিও তার অকৃত্রিম স্নেহ দিয়েছেন আমাকে। এখন তো এমন হয় যে, গানের কথা বললে দাদা বলেন, মানিকের গান আমার আগে শুনে নেয়ার প্রয়োজন নেই, আমার আস্থা আছে তোমার প্রতি। আমার মনে হয়, নচি দা’র সঙ্গে দেড়যুগের পরিভ্রমণে একটা দারুণ বিশ্বস্ততা তৈরি হয়েছে।

আপনি স্ট্যান্ডবাই সং নাম দিয়ে সমসাময়িক বাস্তবতা ও অসঙ্গতির বেশ কিছু গান করেছেন, যেগুলো মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য ও আলোচিত হয়েছে। এ চিন্তা মাথায় কীভাবে এলো?-স্ট্যান্ডবাই সংয়ের ধারণাটা এমন, যখন ঘটনা তখনই গান। আমরা গান মানেই অনেক প্রস্তুতি নিয়ে অডিও রেডি করা, এরপর ভালোমানের ভিডিও তৈরি করতে শুটিং করা। কিন্তু স্ট্যান্ডবাই গানের ধারণাটা হলো, সমাজের অসঙ্গতিকে কালক্ষেপণ না করে সঠিক সময়ে তুলে ধরা। ধারাবাহিকভাবে এরকম অনেক কাজ করে আমি বিপুল সাড়া পেয়েছি। বিশেষ করে, ‘ডিম ও মধ্যবিত্ত চুচু ভাই’ শিরোনামের স্ট্যান্ডবাই সং তো দারুণ সাড়া ফেলেছে।

আপনি রথীন্দ্রনাথ রায়, কুমার বিশ্বজিৎ এবং আসিফ আকবর, এই তিন প্রজন্মের ৩ জনের সঙ্গে গানের কাজ করেছেন। অভিজ্ঞতা কি?-রথীন্দ্রনাথ রায় দাদা আমার কথা এবং হাবিব মোস্তফার সুরে গেয়েছেন জাগরণী গান ‘আগুনের জুতো পায়ে হাঁটছি’; বিশ্বজিৎ দা আমার কথা ও সুরে গেয়েছেন বিশ্বকাপ ক্রিকেটের থিমসং ‘পৃথিবী দ্যাখো বাংলাদেশ’ এবং আসিফ আকবর ভাই গেয়েছেন মানুষমুখী গান ‘ছাত্রবেলার প্রেম ভীষণ ভয়ঙ্কর’। গানের শিরোনামই জানান দিচ্ছে, আমি সমাজকে কী বার্তা দিচ্ছি। তাছাড়া তিন প্রজন্মের ৩ জনের সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতা রঙধনুর মতো বর্ণিল। তারা সত্যিই আমাদের বাংলা গানের সম্পদ।আসন্ন রমজানে এটিএন বাংলায় প্রচারিতব্য মেগা রিয়েলিটি শো বিআরবি সেরাদের সেরা অনুষ্ঠানের

মূল বিচারক হিসেবে কাজ করেছেন। অভিজ্ঞতা কেমন? -দারুণ অভিজ্ঞতা। প্রখ্যাত সংগীত পরিচালক শেখ সাদী খান, জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী মনির খানের সঙ্গে আমিও ছিলাম ওই প্রতিযোগিতার মূল বিচারক। কাজী নজরুল ইসলাম-আব্বাসউদ্দিনের ইসলামী গানের ধারায় তরুণরা যে এখন অনেকদূর এগিয়ে এসেছে, তা আরেকবার প্রত্যক্ষ করে ভালো লেগেছে। মনে হলো, বাংলাদেশের তরুণদের নিয়ে আমরা যে স্বপ্ন ও সম্ভাবনা দেখছি, তা বাস্তবে রূপায়িত হতে যাচ্ছে।

সংগীতশিল্পী হিসেবে সামনের পরিকল্পনা কি? -মানুষের কল্যাণে প্রচুর বিষয়ভিত্তিক গান তৈরি করতে চাই। বাংলাদেশে জীবনমুখী গানের শক্তিশালী জনরা প্রতিষ্ঠা করতে চাই। বাঙালির হৃদয়ের কথাগুলোকে বিশ্বের দরবারে তুলে ধরতে চাই। মোট কথা, তুমি-আমি স্বর্বস্ব গানের বিপরীতে মানবিক গানের প্রবল প্রবাহ তৈরি করতে নিরন্তর প্রচেষ্টা করে যেতে চাই আমৃত্যু।

 

যারা জীবনঘনিষ্ঠ গান করতে চায়, তাদের কি বলবেন?

-নিছক বিনোদন বা ফানের জন্য নয়, আনন্দের মধ্যদিয়ে ন্যায্যতার পৃথিবী গড়তে আমি তরুণদের সংগীত নিয়ে কাজ করার অনুপ্রেরণা দিচ্ছি। দিন শেষে যেনো সবাই আমরা বলতে পারি, আমাদের দেশটাকে ভালো রাখবার জন্য গীতি ও সুর দিয়ে আমরা প্রাণান্ত চেষ্টা করেছি। আমার বিশ্বাস, নতুনদের বোধের দরোজায় ভালো কথা ও সুরের গান দিয়ে আমরা যদি কড়া নাড়তে পারি, তাহলে আগামী বাংলাদেশ নিয়ে আমাদের আর দুশ্চিন্তায় থাকতে হবে না।

সূত্র -মানবজমিন


আরো বিভন্ন নিউজ দেখুন

ই-পেপার

আজকের দিন-তারিখ

  • শনিবার (সকাল ৯:৫৫)
  • ১৮ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  • ১০ই জিলকদ, ১৪৪৫ হিজরি
  • ৪ঠা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ (গ্রীষ্মকাল)