নিজস্ব প্রতিবেদক :
টেকনাফ উপজেলা একাডেমিক সুপার সুপারভাইজার আবছারের বিরুদ্ধে এসএডিপি প্রকল্প থেকে উপরমহলের নামে অনুদানপ্রাপ্ত স্কুলগুলো থেকে ৫০ হাজার টাকা ও মাদ্রাসা থেকে এক লাখ টাকা করে ঘুস আদায় করে বলে অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে।
অনুদানের টাকা কোন খাতে কত পার্সেন্ট খরচ করতে হবে তাও নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে প্রকল্প ম্যানুয়েলে।
এতে শিক্ষক বৃন্দের জন্য প্রণোদনা ২০ ভাগ, বইপত্র লাইব্রেরি, শিক্ষা উপকরণ এবং গবেষণাগার সরঞ্জাম ইত্যাদির উন্নয়নে ৩০ ভাগ, ছাত্রছাত্রী বিশেষ করে ছাত্রীদের জন্য স্কুল/কলেজ/মাদ্রাসা ফ্যাসলিটি অবকাঠামো, বিশুদ্ধ পানি, শৌচাগার, কমনরুম ইত্যাদি উন্নয়নে ২৫ ভাগ, সুবিধাবঞ্চিত শিক্ষার্থীদের সহায়তা বাবত ১৫ ভাগ এবং প্রতিবন্ধী/বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিক্ষার্থীদের ফ্যাসিলিটি উন্নয়নে ১০ ভাগ থাকার কথা বলা হয়েছে অনুদানপ্রাপ্ত বিদ্যালয়ের।
কক্সবাজারের টেকনাফে এসএডিপি প্রকল্পের আওতায় স্কুল-মাদ্রাসায় দেওয়া অনুদানের টাকায় ভাগ বসালেন উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার নুরুল আবসার।
উপরমহলে দেওয়ার নামে তিনি ১৫টি স্কুল-মাদ্রাসা থেকে ১০ লক্ষাধিক টাকা আদায় করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
মাধ্যমিক শিক্ষার গুণগত মান বৃদ্ধির জন্য সেকেন্ডারি এডুকেশন ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রামের (এসইডি পি) আওতায় টেকনাফে প্রথম ধাপে নয়টি স্কুল ও ছয়টি মাদ্রাসাকে পাঁচ লাখ টাকা করে মোট ৭৫ লাখ টাকা অনুদান দেওয়া হয়।
ওই টাকা থেকেই তিনি ভাগ বসালেন বলে গুঞ্জন উঠেছে।
জানা গেছে, একাডেমিক সুপারভাইজার নুরুল আবসার টেকনাফে এক যুগ ধরে চাকরি করে আসছেন।
প্রশ্ন উঠেছে একজন সরকারি কর্মকর্তা একই স্থানে কি করে এতদিন কর্মরত থাকতে পারেন।
নুরুল আবছারের বদলির অর্ডার আসলেও সে তার বদলি বার বার টেকাচ্ছে।
২০০৯ সালের দিকে এক বার তার বদলি হয়েছিল, কিন্তু সেটা আবার কাটিয়ে পুনরায় টেকনাফে চলে আসেন।
তার বিরুদ্ধে আরো অভিযোগ রয়েছে,লোকজন জন্ম নিবন্ধন ফরমে তার কাছে স্বাক্ষরের জন্য গেলে টাকা ছাড়া সে ওই ফরমে স্বাক্ষর করেনা।
কিছুদিন আগে সেন্টমার্টিন বিএন ইসলামিক স্কুল এন্ড কলেজের ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচনটি গোপনে করে কোন নিয়মনীতি অনুসর না করে নুরুল আবসার আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষকের সাথে আতাত করে একটি কমিটি করে দেন।স্কুলে সরকারি বহুকাজে স্কুলের শিক্ষক থেকে সে টাকা হাতিয়ে নেন বলে অভিযোগ পাওয়া যায়।
যুগ যুগ ধরে হোয়াইক্যং স্কুল পরিচালনা কমিটিতে গনতান্ত্রিক ভাবে কোনদিন নির্বাচন সে করেনি। প্রতিবারে পকেট কমিটি করে মনগড়া সভাপতি নির্বাচিত করছেন তিনি।
এদিকে নুরুল আবসার দীর্ঘ এক যুগ পেরিয়ে গেলেও টেকনাফে সে কর্মরত থেকে গেছেন।
এমন ঘটনা নিয়ে নাম প্রকাশের অনিচ্ছুক অনেক শিক্ষক ভয়ে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে বলেন,নুরুল আবসার যুগ যুগ ধরে টেকনাফে থেকে বিভিন্ন ও অনিয়ম-দুর্নীতির সাথে জড়িত হয়ে পড়ছেন।
এসব ভুক্তভোগী শিক্ষকরা ভয়ে তার বিরুদ্ধে কথা বলতে পারেননা।
তাই তারা নিরবে দিন পার করে যাচ্ছেন।
অন্যদিকে সাধারণ মানুষের প্রশ্ন, একজন সরকারি কর্মকর্তা যুগে পর যুগ একই কর্মস্থলে কিভাবে চাকরি করে যাচ্ছেন।
দিন দিন তার ক্ষমতার দাপট অনিয়ম-দুর্নীতির সাথে জড়াচ্ছে।
সাধারণ মানুষ আরো বলেন,আমরা জন্ম নিবন্ধনের স্বাক্ষরের জন্য গেলে টাকা ছাড়া সে স্বাক্ষর করেনা।তাই বাধ্য হয়ে টাকা দিয়ে তার কাছ থেকে স্বাক্ষর নিতে হয়।
এই ব্যপারে অভিযুক্ত আবছারের মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি নিজের বিরুদ্ধে উত্তাপিত অভিযোগ অস্বীকার করেন।
স্থানীয় সুশীল মহলের দাবী এসব অভিযোগ তদন্ত পূর্বক তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করে টেকনাফের শিক্ষা ব্যবস্থাকে বাঁচিয়ে তোলা এখন সময়ের দাবী।