মোঃ আশেক উল্লাহ ফারুকী:
পর্যটন মওসুম এবং জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে টেকনাফ সীমান্তের নাফ নদী ও সাগরের বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে মিয়ানমার থেকে জোয়ারের ন্যায় বড় বড় মাদকের চালান ঢুকছে। উখিয়া উপজেলার পালংখালী সীমান্ত পয়েন্টে হতে শাহপরীরদীপ বদরমোকাম পর্যন্ত ৫৩ কিলোমিটারের ভিতর আলোচিত চোরাই পয়েন্ট দিয়ে মাদকের চালান অবাধে প্রবেশ করেছ। দু দেশের সীমান্ত পর্যায়ে আত্মীয় এবং ক্ষমতার বদৌলতে চোরাকারবারিরা অবস্থা বুঝে মাদকের চালান নিয়ে আসছে।জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রশাসনের ব্যস্ততার সুযোগকে পুঁজি করে মাদক কারবারিরা মাদক পাচারে বেপরোয়া হয়ে পড়েছে। জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার সাথে সাথে মাদক পাচারের আগ্রাসন বৃদ্ধি পেয়েছে। এ সময় বিজিবি, র্যাব ও কোস্ট গার্ড বাহিনীর অভিযানে লাখ লাখ ইয়াবা ও আইস নামক ভয়াবহ মাদকের চালান জব্দ হলেও এর সাথে জড়িত মাদক কারবারি তেমন আটক হচ্ছেনা। অধিকাংশ মাদক মামলা মালিকবিহীন। সূত্র মতে মিয়ানমারে আভ্যন্তরিন রাজনৈতিক সহিংসতায় মিয়ানমারে আমদানি রপ্তানি কার্যক্রম বন্ধ থাকায় টেকনাফ স্থল বন্দর অচলাবস্থা এবং নাফ নদীতে মাছ আহরণ নিষিদ্ধ থাকায় বিকল্প অবস্থায় মাদকের চালান ঢুকতে শুরু করেছে।সূত্র মতে হোয়াইক্যং ইউনিয়নের ঝিমমংখালী,হ্নীলা ওয়াবরাং,জাদিমুড়া,টেকনাফ সদরের কেরুরতলী,বরইতলী,নাজির পাড়া, মৌলবী পাড়া, সাবরাং ইউনিয়নের আলুগোলা চিংড়ি ঘের, নয়াপাড়া আব্দুল গফুর চিংড়ি ঘের,শাহপরীরদীপের জালিয়া পাড়া ও গোলার পাড়া রাজারছড়া এবং টেকনাফ পৌরসভার নাইটংপাড়া।অপরদিকে সাগরে উপকূলের সাবরাং এর খোরেরমূখ,বাহারছড়া,টেকনাফের মহেশখালীয়াপাড়া,তুলাতলী,লম্বরী সহ ৬ টি মৎস্য ঘাট দিয়ে মিয়ানমারের জলসীমা দিয়ে দুদেশের জেলেদের মাধ্যমে হাত বদল হয়ে বিনা বাধায় মাদকের বড় বড় চালান ঘাট দিয়ে চলে আসছে।এছাড়াও সেন্টমার্টিন চিরাদীয়া দিয়ে অনুরূপভাবে মাদকের চালান ঢুকছে।স্থানীয় তালিকাভুক্ত মাদক কারবারির নেতৃত্বে চলছে মাদকের আগ্রাসন। মাদকের আগ্রাসন ও রোহিঙ্গা দমনে উপজেলা মাসিক আইন শৃংখলা কমিটির ও চোরাচালান প্রতিরোধ কমিটির সভায় সিদ্ধান্ত গৃহীত হলেও এর তেমন সুফল পাওয়া যাচ্ছেনা। সূত্র মতে মিয়ানমার থেকে পাচার হয়ে আসা মাদকের চালান নাফ নদী ও সাগর উপকূলীয় এলাকার বসত বাড়ী এবং পানের বরজ,সুপারি বাগান এবং সাগর তীরের বালির চরের ভিতর মওজুদ করে রাখে।ভাড়াটিয়া পাহারাদার নিয়োগ দিয়ে এর রক্ষণাবেক্ষণ করে পরে অবস্থা বুঝে সড়ক পথে লবণ,মাছ ও পান বোঝাই পরিবহনের আড়ালে বেশীরভাগ পাচার হয়ে যায়। ২০১৭ সালে রোহিঙ্গা আগমনের পর থেকে মাদক ও মানব পাচার অতীতের সকল রেকর্ড অতক্রম করেছে।যা নিয়ে সচেতন নাগরিকদের রীতিমতো অভিযোগ উঠেছে। মাদকের পাশাপাশি আরও একটি ভয়ংকর মাদক রাজা নামে খ্যাত ক্রিস্টাল মেথ আইস এর,সাথে যুক্ত হওয়ায় উখিয়া ও টেকনাফ উপজেলায় নানা অপকর্ম অশ্লীলতা সহ অপরাধ প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে। এ নিয়ে আইন শৃংখলা পরিস্থিতি অবনতি ঘটিয়ে ডাকাতি,অপহরণ,খুনাখুনি ও কালোটাকার পেশিশক্তির দাপট বৃদ্ধি পেয়েছে।