ফরিদুল মোস্তফা খান :
কথা আর কাজে মিল নেই প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধন করে দেওয়া কক্সবাজারগামী যাত্রীবাহী ট্রেনের।
সকাল ৬ টায় যেই ট্রেন কক্সবাজার আসার কথা সেই ট্রেনের দেখা ৯ টায়ও মিলে না।
ঘন্টার পর ঘন্টা অপেক্ষা করে অবশেষে কক্সবাজার আসা ট্রেন যাত্রীদের নিয়ে চলে তালবাহানা।
জেলা পুলিশ পর্যটক হয়রানি ঠেকাতে ট্রাফিকের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জসিম উদ্দিনের নেতৃত্বে চৌকস টিম ভোরে ট্রেন স্টেশনে গিয়ে একটি সুশৃঙ্খল পরিবেশ এনে দিলেও স্থানীয় কিছু পুলিশ বিদ্ধষী মাতব্বর কিছু না বুঝেই আবুল তাবুল মন্তব্য করার কারণে জনমনে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।
সোমবারের আগে এক ভোরে কক্সবাজার ট্রেন স্টেশন সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা গেছে, জেলা ট্রাফিক পুলিশের অতিরিক্ত সুপার জসিম উদ্দিন সেখানে অবস্থান করছেন।
তিনি স্টেশনে যাত্রীদের জন্য অপেক্ষারত টমটম সহ বিভিন্ন যানবাহন মালিকদের পর্যটক সেবার বিষয়ে নমনীয় তাগিদ দিচ্ছেন।
সেখানে প্রায় তিন শতাধিক টমটম ভোর ৬ টা থেকে অবস্থান করছেন।
৯ টার দিকে ঢাকা থেকে পর্যটক নিয়ে আসা ট্রেন কক্সবাজার পৌঁছালে টমটম চালকরা তাদের ব্যাগপত্রসহ গন্তব্য স্থলে পৌঁছে দিয়ে একজন চালক গড়ে ১৫০/২০০ টাকা করে পেয়েছেন।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে, একজন টমটম চালক তিন চার ঘন্টা অপেক্ষা করে যদি দেড় দুইশ টাকা উপার্জন করেন সেটা কি বেশি হয়েছে?
স্থানীয় কয়েকজন বিশিষ্ট ব্যক্তি কক্সবাজারবাণীকে বলছেন,ট্রাফিকের এ্যডিশনাল এসপি যদি টমটম চালকদের ভাড়া নির্ধারণ করে না দিতেন,তাহলে চালকরা যাত্রীদের কাছ থেকে ৫০ টাকার পরিবর্তে জন প্রতি ৩/৪শ ক্ষেত্র বিশেষ যা ইচ্ছা তাই নিয়ে পর্যটক হয়রানির মাত্রা আরও বাড়িয়ে দিত।
এ অবস্থায় সচেতন মহল বলছেন,পৌরসভার মেয়র কাউন্সিলর ও দুর্নীতিবাজরা যেখানে একটি টমটমের লাইসেন্সের জন্য লাখ টাকা নেন সেখানে টমটম চালকরা জীবন জীবিকা নির্বাহের জন্য শারীরিক পরিশ্রম করে দু চার পয়সা উপার্জন করলে যদি তাদের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা হয় লোকসানের মূখে পর্যটক সেবায় নিয়োজিত টমটম চালকরা যানবাহন ত্যাগ করে কক্সবাজার শহরে চুরি ছিনতাই মাদক পতিতা সহ নানা অপকর্মে জড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
এ অবস্থায় যারা ট্রেন যাত্রী টমটম ভাড়া নিয়ে তাদের কোন অভিযোগ নেই।
কিন্তু পুলিশ বিদ্ধেষীরা এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্নভাবে কক্সবাজার নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করে অনেকটা মায়ের চেয়ে মাসির দরদ দেখাচ্ছেন।
রবিবার এই বিষয়ে কক্সবাজারের অনিবন্ধিত একটি নিউজ পোর্টাল পরিচয়ী ফেইসবুক পেইজ (টিটিএন)
কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে কক্সবাজার পৌরসভার মেয়র মাহবুবুর রহমান চৌধুরী বলেন,ট্রাফিক পুলিশ ভাড়া নির্ধারণ করতে পারবে না।
প্রেসক্লাবের সভাপতি আবু তাহের বলেন,টমটমের ভাড়া নির্ধারণ করার জন্য জেলা প্রশাসকের সভাপতিত্বে একটি কমিটি আছে।
সেই কমিটি এই ভাড়া নির্ধারণ করবেন।
পুলিশের কাজ এইটা নয় বলে জনমনে পুলিশের সম্পর্কে বিরুপ ধারণা সৃষ্টি করে মনগড়া বক্তব্য দিলেও বাস্তবতা হচ্ছে, পৌর মেয়র এবং প্রেসক্লাব সভাপতি জানেনই না পুলিশ কি করতে পারে, না পারে।
রেলওয়ে স্টেশন কক্সবাজার পৌরসভার বাহিরের এলাকা। সেখানে মেয়রের কথা বলা সম্পূর্ণ অনৈতিক হস্তক্ষেপ।পৌরসভার বর্তমান টমটম ভাড়ার তালিকায় সরকারি কলেজ কিংবা লিংকরোডের উল্লেখ নেই।
দম্ভ অহংকার ও আমিত্ব প্রকাশের জন্য পৌর মেয়র মাহবুব ও প্রেসক্লাব সভাপতি আবু তাহেরের দেওয়া বক্তব্য মতে যে সব আইন কানুনের কথা বলেছেন সেই সব আইন কানুন সম্পর্কে তাদের নিজেদের সুস্পষ্ট ধারণা না থাকার কথা জানিয়ে কক্সবাজার জেলা ও পুলিশ প্রশাসনের দায়িত্বশীল কয়েকজন কর্মকর্তা কক্সবাজারবাণীকে জানান বিআরটিএর শ্রেণীভুক্ত নয় এমন যানবাহনের ভাড়া নির্ধারণ করার এখতিয়ার বিআরটিসির ও নেই।
বাংলাদেশের কোন জেলা প্রশাসক তা করেন নি।
এদিকে স্বপ্নের ট্রেন চলাচল শুরুর সাথে সাথে স্থানীয় শিয়াল পণ্ডিতদের এমন পর্যটন বিদ্ধেষী কর্মকান্ডে জনমনে অসন্তোষ বিরাজ করছে।
খোজ নিয়ে জানা গেছে, কক্সবাজারবাসীর বহুল প্রত্যাশীত ট্রেন চলাচলের সুবাদে চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ীরা কৌশলে ইয়াবার চালান নিয়ে যাচ্ছে।
কক্সবাজারের গোয়েন্দা তালিকাভূক্ত দুর্নীতিবাজ কিছু ইয়াবা সাংবাদিক ও কিছু নেতা পাতি নেতা জনপ্রতিনিধি পরিচয়ী মাদক পৃষ্ঠপোষকরা সামাজিক মূখোশের আড়ালে এই অপকর্মে গোপন ঈন্দন দিচ্ছে।
অপরদিকে খোজ নিয়ে জানা গেছে, কক্সবাজার হোটেল মোটেল গেস্ট হাউজ রেস্তোরাঁ সহ সর্বত্রে দিবারাত্রি ২৪ ঘন্টা পর্যটকদের গলাকাটা বানিজ্য করে আসলেও গোপন মধুতে তুষ্ট স্থানীয় পৌরসভা সহ কারও কোন মাথাব্যথা নেয়।