ফরিদুল মোস্তফা খান :
নিত্যপণ্যের লাগামহীন মূল্য বৃদ্ধি গরীব, নিম্ন ও সীমিত আয়ের মানুষসহ নিম্ন ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির বিপুল সংখ্যক মানুষের জীবনকে রীতিমত দুর্বিসহ করে তুলছে। নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারেও আজ নুন আনতে পান্তা ফুরোনোর দশা।
দ্রব্যমূল্যের ক্রমাগত বৃদ্ধিতে এভাবেই নিজেদের অসহায়ত্ব প্রকাশ করেন নগরীর সাধারণ জনগণও নিম্ন আয়ের মানুষগণ।
তাঁরা বলেন,দ্রবমূল্যের লাগামহীন বৃদ্ধিতে আমরা একেবারে নাজেহাল হয়ে পড়েছি। আগের তুলনায় বর্তমানে প্রতিমাসে আরও তিন থেকে চার হাজার টাকা বেশি লাগছে। যা আমদের আয় থেকে দেওয়া অনেকের জন্যই বেশ কষ্টকর।তেল গ্যাস থেকে শুরু করে নিত্যপ্রয়োজনীয় সব পণ্যের দাম শুধু বাড়ছে আর বাড়ছে। সাধারণ মানুষ অসাধারণ হতে পারছে না বলে তাদের কষ্টের সীমা নেই। নুন আনতে পান্তা ফুরায় – প্রবাদটি আজ চরম সত্য হয়ে ঘাড়ে বসেছে।
বাজারে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, নিত্যপণ্যের দাম হু হু করে বাড়ছে। চাল, ডাল, তেল, গ্যাস, আটা, চিনি, মাছ, ডিম থেকে শুরু করে শাক-সবজি এমন কোনো নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নেই, যার দাম বাড়েনি বা বাড়ছে না। বাজারজুড়ে মিলছে শীতের সবজি। কিন্তু ভরা মৌসুমেও তার দাম আকাশ ছোঁয়া।
নগরীরর বাজার ব্যাবসায়ীরা জানান , দ্রব্যমূল্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় ক্রেতারা যেমন ক্ষীপ্ত, তেমনি আমরাও বিব্রতকর পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছি। সাধারণ মানুষ বাজারে এসে দাম শুনে প্রয়োজনীয় অনেক কিছু না কিনে চলে যাচ্ছেন। আবার কেউ কেউ বেশি দামে কিনতে বাধ্য হচ্ছেন।
প্রতিনিয়তই চাল, তেল ডালসহ নিত্যপণ্যের দাম বাড়াছে। সম্প্রতি এই সময় পেয়াজের দাম বেড়ে ১২০ থেকে ১৩০ টাকা, ২০২১ সালে সয়াবিন তেল প্রতি কেজির পাইকারি দাম ছিল ৮৮ টাকা, ২০২২ সালে ১১৫ টাকা ও চলতি বছর ১৬০ টাকা। ২০২০ সালে পাম ওয়েল ছিল ৬৪.৫ টাকা, ২০২২ সালে ৯০ টাকা ও বর্তমানে ১৫০ টাকা। ২০২২ সালে মোটা মসুর ডালের দাম ছিল কেজি ৮৯ টাকা, ২০২৩সালে ১২০ টাকা। ২০২২সালে দেশি মসুর ডালের দাম ছিল ১০০ টাকা, বর্তমানে ১৩০ টাকা। ২০২২ সালে বিদেশি চিনির দাম ছিল ৭০ টাকা, বর্তমানে ১০০ টাকা। ২০২২সালে আটার দাম ছিল ৩৫ টাকা ২০২৩ সালে ৫০ টাকা। ২০২২ সালে লবনের কার্টুনের দাম ছিল ৩০০ টাকা আর বর্তমানে ৩৯০ টাকা।
সিম, মিষ্টি আলু ৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। যা গত বছর এই সময় ছিল ৩০-৩৫ টাকা কেজি। চালের দামও ভরা মৌসুমে ঊর্ধ্বমুখী। সাধারণ মানুষের আয়ের সঙ্গে ব্যয়ের হিসেব মিলছে না। নিত্যপণ্যের লাগামহীন মূল্যবৃদ্ধির কারণে সাধারণ মানুষ হতাশ হয়ে পড়ছে। সঙ্গে বাড়ছে ক্ষোভ। হতাশায় নিমজ্জিত খেটে খাওয়া মানুষের পাশাপাশি মধ্যবিত্তরাও।