ফরিদুল মোস্তফা খান :
রাহবারে বায়তুশ শরফ আল্লামা শায়খ মুহাম্মদ আবদুল হাই নদভী (পীর সাহেব, বায়তুশ শরফ) বলেছেন, বিশ্বময় আজ মুসলিম উম্মাহ গভীরভাবে সংকটাপন্ন।
ফিলিস্তিনের নিরস্ত্র মসলিম শিশু, নারী ও বৃদ্ধসহ সাধারণ মানুষের রক্ত ঝরছে।
ফিলিস্তিনের জনপদ ধ্বংসস্তুপে পরিণত হতে চলেছে। মানবতার মুক্তির জন্যে আহাজারিতে আকাশ-বাতাস ভারী হতে চলেছে।
তিনি বিশ্ব মুসলিম বিপন্ন ফিলিস্তিনী মুসলমানদের পাশে দাঁড়ানোর আহবান জানান। বিশ্ব নবীর সঃ এর বড় ভক্ত বড়পীর আবদুল কাদের জিলানী (রাহ.)
বিপণ্ন মানবতার পাশে দাঁড়াতে শিখিয়েছেন।
বড়পীর হযরত আবদুল কাদের জিলানী (র.) এর উফাত দিবস উপলক্ষে শুক্রবার (২৭ অক্টোবর) কক্সবাজার বায়তুশ শরফের বার্ষিক ইছালে ছওয়াব মাহফিলে (ফাতেহা-এ-ইয়াজদহুম) রাহবারে বায়তুশ শরফ এসব কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, মুসলিম উম্মাহ আজ গভীর ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। ফিলিস্তিনে হাজারো নিরপরাধ নারী-পুরুষের রক্ত ঝরছে। এই কঠিন মুহূর্তে গাউসে পাকের অনুসারীদের ঐক্যের প্রয়োজন। তিনি ছিলেন বিশ্বনবীর সঃ এর বড় অনুসারী। তাই তিনি বড় পীর। তিনি মানবতার মুক্তির জন্য আজীবন সাধনা করেছেন। বায়তুশ শরফের পীর সাহেবগণ ওই পথেরই অনুপ্রেরণা।
মাহফিলে প্রধান আলোচক ছিলেন ডক্টর মাওলানা শহীদুল ইসলাম বারাকাতী।
কক্সবাজারে প্রতিবছর মতো অনুষ্ঠিত
এই ইছালে ছওয়াব মাহফিল সবচাইতে বড় দ্বীনি মাহফিল। হাজার হাজার দ্বীনদার ঈমানদার মুসলমানরা এতে অংশ গ্রহণ করে থাকেন।
রাহবারে বায়তুশ শরফ শায়খ আল্লামা মুহাম্মদ আবদুল হাই নদভী (পীর সাহেব, বায়তুশ শরফ) এর সভাপতিত্বে মাহফিলে আলোচনা করেন, খন্দকার মাওলানা মাহবুবুল হক, চট্টগ্রাম সীতাকুণ্ড আলিয়া মাদরাসার সাবেক অধ্যক্ষ ও কক্সবাজার কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের খতীব মাওলানা মাহমুদুল হক, বায়তুশ শরফ আদর্শ কামিল মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা আবু সালেহ মুহাম্মদ ছলীমুল্লাহ, অধ্যক্ষ মাওলানা কফিল উদ্দিন ফারুক, অধ্যক্ষ মাওলানা আবদুল কাদের নিজামী, অধ্যক্ষ মাওলানা রুহুল কুদ্দুস আনোয়ারী, মাওলানা জিয়াউল হক আনছারী, অধ্যক্ষ মাওলানা ফারুক হোসাইন, বায়তুশ শরফের খতীব মাওলানা রিদুয়ানুল হক, মাওলানা মহিউদ্দিন মাহবুব, মাওলানা লোকমান হাকীম, মাওলানা কাজী শিহাবুদ্দিন, অধ্যক্ষ মাওলানা নুরুল আলম ফারুকী, মাওলানা কাজী জাফর আহমদ।
বক্তারা বলেন, অল্প ইহুদীরা আজ ঐক্যবদ্ধ। বায়তুল মুকাদ্দাসের দেশ ফিলিস্তিন দখলে নিতে ইসরাইলী সন্ত্রাসীরা মরিয়া হয়ে উঠেছে। পারমানবিক বোমা মেরে নিরীহ মুসলমানদের হত্যা করছে। বাদ যাচ্ছে না নারী, নিষ্পাপ শিশুরাও। লাশের গন্ধে ভারি হয়ে গেছে ফিলিস্তিনের পূণ্যভূমি। এই মুহূর্তে মুসলিম বিশ্বনেতাদের এক মঞ্চে আওয়াজ তুলতে হবে।
পরকালে মিথ্যাবাদিদের কঠিন পরিণতি হবে। শরীরের সমস্ত অঙ্গপ্রত্যঙ্গ দুনিয়ার জীবনে কৃতকর্মের স্বাক্ষ্য দেবে। মানুষ যত অপরাধ করেছে জমিন তা প্রকাশ করে দেবে।
মাহফিলের শুরুতে কুরআন তিলাওয়াত করেন আমির হোসেন। নাতে রাসুল পরিবেশন করেন শাহ কুতুবউদ্দিন আদর্শ দাখিল মাদরাসার ছাত্র মুহাম্মদ ফয়সাল।
মাহফিলের দিন সকালে খতমে কুরআন, খতমে সূরা আন-আম, খতমে খাজেগান, খতমে তাহলিল, খতমে বোখারী, বাদে মাগরিব জিকির মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।
বায়তুশ শরফ শাহ কুতুবউদ্দিন (রহ.) হিফযখানা থেকে হিফয সম্পন্নকারী ছাত্রদের মাহফিল মঞ্চে দস্তারবন্দী (হাফেজদের পাগড়ি) প্রদান করেন অতিথিবৃন্দ।
বায়তুশ শরফ কমপ্লেক্সের মহাপরিচালক ও মাহফিল উদযাপন পরিষদের আহ্বায়ক এম এম সিরাজুল ইসলামের সার্বিক তত্বাবধানে দুই দিনব্যাপী মাহফিল সুন্দর ও সুশৃঙ্খলভাবে সম্পন্ন হয়েছে।
এম এম সিরাজুল ইসলাম
মাহফিলের আলোচক, অতিথিসহ বিভিন্ন বিভাগে দায়িত্ব পালনকারীদের ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান।