অপহরণ করে মুক্তিপণ দাবি আদায় চক্রের মূলহোতাসহ ২ জন গ্রেফতার এবং ভিকটিমকে কক্সবাজারের উখিয়া থানাধীন জালিয়াপালং লম্বরী পাড়া এলাকা থেকে র্যাব-১৫ কর্তৃক উদ্ধার।
র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়নের সৃষ্টিলগ্ন থেকে বাংলাদেশে অপরাধ নির্মূলে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখে আসছে। র্যাব-১৫ দায়িত্বপূর্ণ এলাকায় বিভিন্ন মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত/এজাহারভুক্ত আসামী, অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী, অপহরণ, ধর্ষণ, খুন, ডাকাতি, চুরি-ছিনতাই এবং মাদকসহ সমাজে বিরাজমান নানাবিধ অপরাধ দমনের লক্ষ্যে আন্তরিকতার সহিত নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
র্যাব বলেন,কক্সবাজারের চকরিয়া থানাধীন মাইজ ঘোনার মাঝের পাড়া এলাকার জনৈক মোহাম্মদ আশহাদুল ইসলাম র্যাব-১৫, কক্সবাজার নিকট অভিযোগ দায়ের করেন যে, গত ০৯ অক্টোবর ২০২৩ তারিখ অনুমান রাত ২২.৩০ ঘটিকার সময় তার বড় ভাই মাছ ব্যবসায়ী সাখাওয়াত হোসেন (৩৩) জমি-জমা সংক্রান্ত মামলার কাজে কক্সবাজারে আসে এবং ঐদিন কক্সবাজার থেকে নিজ বাড়িতে ফেরার পথে অপরহণের শিকার হয়। পরদিন অর্থ্যাৎ ১০ অক্টোবর ২০২৩ তারিখ সকাল অনুমান ০৮.৩০ ঘটিকার সময় অপহরণকারীরা মোহাম্মদ আশহাদুল ইসলামের ব্যক্তিগত মোবাইল নম্বরে কল দিয়ে ১০ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দাবী করে এবং অন্যথায় তার ভাইকে খুন করে লাশ গুম করে ফেলার হুমকি ও ভীতি প্রদর্শন করে। এমতাবস্থায়, ঐদিন রাত অনুমান ২৩.০০ ঘটিকার সময় অপহরণকারীদের প্রদত্ত পার্সোনাল নগদ নম্বর ০১৮৮২-৬৩২৮৯৮ এ নম্বরে ৫০ হাজার টাকা প্রেরণ করেও অপহৃত ভিকটিমের মুক্তি মিলেনি। ঘটনার বিষয়ে অবহিত হওয়ার পর থেকে র্যাব-১৫ কর্তৃক গোয়েন্দা নজরদারী বৃদ্ধি করা হয়।এরই ধারাবাহিকতায় গত ১১ অক্টোবর ২০২৩ তারিখ অনুমান ভোর ০৫.৫০ ঘটিকার সময় র্যাব-১৫, কক্সবাজারের একটি চৌকস আভিযানিক দল অপহৃত ভিকটিমকে উদ্ধারের লক্ষ্যে কক্সবাজার জেলার উখিয়া থানাধীন জালিয়াপালং ইউনিয়নের লম্বরী পাড়া এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে এবং অপহৃত ভিকটিমকে উদ্ধার করতে সক্ষম হয়। এ সময় অপহরণ চক্রের মূলহোতাসহ দুইজনকে আটক এবং ভিকটিমের নিকট হতে ছিনিয়ে নেয়া নগদ ১,০০,০০০/- টাকার মধ্যে ৮৩,০০০/- (তিরাশি হাজার) টাকা উদ্ধার করা হয়।
গ্রেফতারকৃত আসামীদের বিস্তারিত পরিচয় ১। নইমুদ্দিন (৩৫), পিতা-মৃত গোরা মিয়া চৌধুরী, মাতা-জাফুরা বেগম, সাং-চৌধুরীপাড়া এবং ২। আব্দুল মালেক প্রঃ মালেক মিয়া (৫৬), পিতা-মৃত ওলা মিয়া, মাতা-মৃত আল মাসকাতু, সাং-লম্বরিপাড়া, উভয়ের থানা-উখিয়া ও জেলা-কক্সবাজার বলে জানা যায়। এছাড়াও ধৃত ব্যক্তিদ্বয় তাদের সাথে থাকা অন্য দুইজন সহযোগীর নাম ও ঠিকানা প্রকাশ করে এবং তারা র্যাবের উপস্থিতি বুঝতে পেরে কৌশলে পালিয়ে যায় মর্মে স্বীকার করে।
র্যাব আরও বলেন,প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, ঘটনার দিন ভিকটিম কক্সবাজারের কলাতলী ডলফিন মোড় এলাকায় অবস্থানকালে গ্রেফতারকৃতরা মাইক্রোবাস গাড়ি যোগে অস্ত্রশস্ত্র দ্বারা হত্যার ভয় দেখিয়ে জিম্মি করতঃ জোরপূর্বক অপরহণ করে উখিয়ায় নিয়ে যায়। অপহৃত ভিকটিমকে হত্যার ভয় দেখিয়ে হাত-পা বেঁধে জোরপূর্বক দশ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দাবী করে এবং প্রচন্ডভাবে মারধর করে। এছাড়াও তারা ভিকটিমের নিকট থাকা নগদ এক লক্ষ টাকা ছিনিয়ে নিয়ে যায়। আরো জানা যায় যে, চক্রটি দীর্ঘদিন যাবত কক্সবাজার শহর এলাকার বিভিন্ন জনসাধারণকে নানা কায়দা-কৌশলে জোরপুর্বক অপহরণ করে শারীরিক নির্যাতন ও মুক্তিপণ বাবদ নগদ অর্থ আদায় করে আসছিল।
র্যাব জানান,ভিকটিমের ছোট ভাই মোহাম্মদ আশহাদুল ইসলাম বাদী হয়ে গ্রেফতারকৃত দুই আসামী ও পলাতক অপর দুই আসামী এবং অজ্ঞাতনামা ৪/৫ জনের বিরুদ্ধে কক্সবাজার সদর মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।