ফরিদুল মোস্তফা খান :
সাংবাদিকদের মানুষ সন্মান করে বলতেন,জাতির বিবেক।সমাজের দর্পন।কতো মহৎ আর সন্মানের কাজ সাংবাদিকতা।এই সাংবাদিকতা যদি হয়,লজ্জার,অভিশপ্ত তা হলে আর কি বলবো?দেশে এখন অসংখ্য পত্রিকা, টেলিভিশন চ্যানেল।রাজধানী ঢাকা বাদে সমগ্র দেশের পত্রিকা কতৃপক্ষ স্টাফদের বিশেষ করে সাংবাদিকদের বেতন ভাতা দেন না।ও সব পত্রিকার সাংবাদিকদের পরিচয়পত্র ধরিয়ে দিয়ে মাঠে নামিয়ে দিচ্ছেন। রাজধানী ঢাকা থেকে প্রকাশিত শীর্ষ দৈনিক এবং চ্যানেল গুলোর বেশিরভাগই সাংবাদিকদের আর্থিক সুবিধা দেয় না।আর এইসব পত্রিকা এবং চ্যানেল গুলোর শুধু জেলা শহরেই নয়,প্রায় উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিযুক্ত রয়েছেন। যে সকল প্রতিনিধির আর্থিক সচ্ছলতা রয়েছে তাঁদের কথা ভিন্ন। তাঁরা নিজেদের পকেটের টাকা খরচ করে সমাজসেবা করে যাচ্ছেন। আর যাঁরা আর্থিক ভাবে অসচ্ছল এবং অসৎ উদ্দেশ্য নিয়ে সাংবাদিকতার ব্যনার ব্যবহার করছেন, তিনি এবং তাদের পরিবার তো আর হাওয়া খেয়ে বাঁচছেন না! সাংবাদিকতার ব্যানার ব্যবহার করে তারা নানা ধরনের অপরাধ কর্মকান্ডে জড়িয়ে আছেন। ঢাকা সহ সারা দেশের এমন কিছু পত্রিকা আছে,সে গুলো নিয়মিত প্রকাশিত হয় না।এ সব পত্রিকা সূর্যের মুখ না দেখলেও,তাদের আছে পরিচয়পত্রধারী সাংবাদিক। এই পরিচয় পত্র যে,শুধুমাত্র পত্রিকা কতৃপক্ষ ইস্যু করেন তাও নয়।রাস্ট্রের তথ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন তথ্য অধিদপ্তর, পি আই ডি থেকেও দেয়া হয়।তথ্য অধিদপ্তরের নথিপত্র দেখলেই পরিস্কার হয়ে যাবে।সাংবাদিকতার নামে বর্তমানে দেশে কি চলছে তা ভুক্তভুগীরাই ভালো জানেন। এ সব অসাধু কথিত সাংবাদিক চক্রের সাথে রয়েছে, প্রশাসনের একশ্রেনীর অসাধু কর্মকতা কর্মচারীর আঁতাত। এ সব দুর্নীতিবাজ সাংবাদিক প্রতিষ্ঠা করতে, ডি এফ পি’ র অসাধু কর্মকতা কর্মচারীদের প্রতক্ষ এবং পরোক্ষ ভাবে আঁতাত রয়েছে।আন্ডার গ্রউন্ড পত্রিকা, অর্থাৎ যে সব পত্রিকা আদৌ আলোর মুখ দেখছে না।সে সব পত্রিকাকেও কোটি কোটি টাকার বিজ্ঞাপন দেয়া হয়।রাস্ট্রের,জনগণের হাজার কোটি টাকার বিজ্ঞাপন লুটেনিচ্ছে লুটেরারা।মাননীয় তথ্য মন্ত্রী, মন্ত্রণালয়ের কাছে এটা হয়তো ওপেন সিক্রেট। অথচ যাঁরা প্রকৃত নিষ্ঠাবান নির্ভীক সাংবাদিক তাঁরা মানবেতর জীবনযাপন করছেন।
সম্প্রতি সাগরে, নদীতে মাছধরা নিষেধাজ্ঞা কালীন সময়ে,বরিশালের কতিপয় কথিত সাংবাদিক, পত্রিকার পরিচয়পত্র নিয়ে মাছ ধরতে গেলে পুলিশ তাদের আটক করে।এ সব সাংবাদিক পুলিশকে ক্রাইম রিপোর্টার বলে বার বার চ্যালেঞ্জ করে আসছিলো।
আমরা যতোটা জানি,একটি পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার হলো অলরাউন্ডার। যে সব রিপোর্টার যে যে বিভাগ সম্পর্কে ভালো ধারণা রাখেন, তাঁদের বিভিন্ন বিভাগে ( পত্রিকার ভাষায় বিট বলা হয়) ভাগ করে দেয়া হয়।রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, আন্তর্জাতিক, সাংস্কৃতিক, অপরাধ সহ অন্যান্য।আমার জানামতে সরকারি গেজেট বা নীতিমালায় ক্রাইম রিপোর্টার বলতে কোনো পোস্ট নেই।
আজকের প্রেক্ষাপটে আমরা দেখতে পাচ্ছি, মাফিয়া চক্র তাদের ইচ্ছে মতো টিভি চ্যানেল খুলছেন।পত্রিকা বের করছেন।আবার তাদের খেয়াল খুশি মতো ওসব প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিচ্ছেন। আজকের এই করোনা দুর্যোগে এবং পবিত্র রমজান মাসের মধ্যেও হচ্ছে।
আমি বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন, ঢাকা রিপোর্টাস ইউনিয়নের সকল নেতৃবৃন্দের কাছে সবিনয় অনুরোধ করছি, বিষয় টি জরুরি দৃষ্টি দিন এবং নির্ভীক সাংবাদিকদের ইজ্জত রক্ষা করুন।
আমি বাংলাদেশ সরকারের নীতিনির্ধারনী মহল এবং সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের কাছে দাবি করছি,শতকোটি টাকার বিজ্ঞাপন আন্ডারগ্রাউন্ড পত্রিকায় খরচ না করে, এ অর্থ তথ্য প্রযুক্তি,আই টি খাতে খরচ করলে আগামি প্রজন্ম উপকৃত হবে।দেশ হবে সমৃদ্ধ। সোনার বাংলার নাগরিকরা সমগ্র পৃথিবীর কাছে মাথা উঁচু করে দাড়াতে পারবে।
– লেখাটি তিন বছর আগে আমার সাংবাদিক বন্ধু দৈনিক ইত্তেফাকের সাব-এডিটর জনপ্রিয় কথা সাহিত্যক রাজধানীর বাঘ নাছিম আনোয়ারের লিখা!