তিনি বলেন, স্বাধীনতার ৫২ বছর পর এসে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রশ্নে যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা বিধিনিষেধ এসেছে। এটি আমাদের দেশের প্রাপ্য নয়। এজন্য বিএনপিসহ বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর কোনো দায় নেই, এককভাবে সরকারই দায়ী। শনিবার এক প্রতিক্রিয়ায় সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন বিএনপি মহাসচিব।
বিরোধী দলের সদস্যদের ব্যাপারেও যুক্তরাষ্ট্র ভিসা বিধিনিষেধের যে কথা বলেছে, এ নিয়ে বিএনপি চিন্তিত নয় বলে বিএনপি নেতারা বলছেন। এর কারণ হিসাবে তারা বলেন, সরকারের কারণেই এ ধরনের পরিস্থিতি হয়েছে। ফলে ক্ষমতাসীনদের জন্যই এটি চিন্তার বিষয়।
যুক্তরাষ্ট্রের এ পদক্ষেপে বাংলাদেশে নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হবে, এমনটা বিএনপি মনে করছে কি না-এমন প্রশ্নে মির্জা ফখরুল বলেন, সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন করার পরিবেশ সৃষ্টির জন্য সরকারের অবস্থানের কোনো পরিবর্তন এখনো হয়নি। আসলে এখন সরকার কী করবে, সেটা তাদের ওপর নির্ভর করছে। আর আমরা জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আন্দোলন অব্যাহত রাখব।
এদিকে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু শনিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এক প্রতিবাদ সভায় বলেন, আমাদের প্রধানমন্ত্রী আমেরিকায় থাকা অবস্থায় দেশটি ভিসানীতির কার্যক্রম চালু করেছে। কেন করেছে? কারণ, বাংলাদেশে গণতন্ত্র নেই। ভোটের অধিকার নেই। আর এ কারণে আমেরিকা আগে স্যাংশন দিয়েছিল, এখন ভিসানীতি কার্যক্রম শুরু করেছে। এ সময় তিনি প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে বলেন, যত তাড়াতাড়ি পদত্যাগ করবেন, তত ভালো হবে। দেশের মানুষ চায় আপনি পদত্যাগ করুন। যদি না করেন, তাহলে দেশের মানুষ বাধ্য করবে কেয়ারটেকার সরকার প্রতিষ্ঠিত করতে। অক্টোবর হবে জালিম পতনের মাস। অক্টোবরেই সরকারের সঙ্গে দেনা-পাওনার সবকিছু মীমাংসা হয়ে যাবে।
বাংলাদেশ নাগরিক অধিকার আন্দোলনের উদ্যোগে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসার জন্য বিদেশে প্রেরণ এবং আমানউল্লাহ আমান, সালাউদ্দিন আহমেদ, রফিকুল আলম মজনু, তানভীর আহমেদ রবিনসহ জাতীয় নেতাদের মুক্তি দাবিতে এ সভা হয়। আয়োজক সংগঠনের আহ্বায়ক এম জাহাঙ্গীর আলমের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব ইঞ্জিনিয়ার মোফাজ্জল হোসেন হৃদয়ের সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন বিএনপির সহ-তথ্যবিষয়ক সম্পাদক কাদের গণি চৌধুরী, তাঁতী দলের ডা. কাজী মনিরুজ্জামান মনির প্রমুখ।
বাংলাদেশের নির্বাচন সুষ্ঠু ও অবাধ করার লক্ষ্যে যুক্তরাষ্ট্র ভিসানীতি ঘোষণা করেছে ২৪ মে। এ ঘোষণার চার মাসের মাথায় শুক্রবার দেশটির পক্ষ থেকে এক ঘোষণায় বলা হয়, যেসব ব্যক্তি বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক নির্বাচনি প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করছে, তাদের বিরুদ্ধে ভিসা নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে। তাদের মধ্যে আছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, ক্ষমতাসীন দল এবং রাজনৈতিক বিরোধী পক্ষ। যাদের বিরুদ্ধে ভিসা নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে, তাদের পরিবারের সদস্যরাও এ নিষেধাজ্ঞার আওতাভুক্ত। এর বাইরেও কেউ যদি নির্বাচনি প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করে তবে তাকেও ভিসা দেওয়া হবে না।