গতকাল সমন্বিত ভ্যাকসিন কার্যক্রম শুরু করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। একে ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লিয়েন ‘ঐক্যের এক হূদয়ছোঁয়া মুহূর্ত’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। খবর বিবিসি ও রয়টার্স।
চলতি বছর করোনা মহামারী বিশ্বব্যাপী যে দুঃস্বপ্ন হয়ে হাজির হয়েছে তা থেকে বেরিয়ে আসতে এ ভ্যাকসিন কর্মসূচি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচিত হচ্ছে। অঞ্চল হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের পর সবচেয়ে বেশি প্রাণহানি হয়েছে ইউরোপে।
গত শনিবার উরসুলা ভন ডার লিয়েন জানান, ফাইজার-বায়োএনটেকের ভ্যাকসিন ইইউর ২৭ সদস্য রাষ্ট্রে পাঠানো হয়েছে। অনেক রাষ্ট্রই পাওয়া মাত্রই ভ্যাকসিন কার্যক্রম চালু করেছে। তারা একদিনও অপেক্ষা করতে পারছিল না। ইইউভুক্ত দেশগুলোতে এখন পর্যন্ত ৩ লাখ ৩৫ হাজারের বেশি মানুষ করোনাভাইরাসে প্রাণ হারিয়েছেন। আক্রান্ত হয়েছেন ১ কোটি ৪০ লাখের বেশি মানুষ। প্রায় সব সদস্য রাষ্ট্রেই এখন কঠিন লকডাউন চলছে।
যে সময় করোনার আরেকটি রূপ ইউরোপসহ জাপান ও কানাডায় ছড়িয়ে পড়ছে, তখনই ভ্যাকসিন কার্যক্রম চালুর ঘোষণা দিল ইইউ।
শিগগিরই চালু হচ্ছে ইউরোপজুড়ে ৪৪ কোটি ৬০ লাখ মানুষের মধ্যে ভ্যাকসিন প্রদান। এর আগে ইউরোপীয় মেডিসিন এজেন্সি এবং ইউরোপীয় কমিশন ফাইজারের ভ্যাকসিন অনুমোদন দেয়। ইইউ এরই মধ্যে ২০০ কোটি ডোজ ভ্যাকসিন নিশ্চিত করেছে। এ নিয়ে দেয়া এক বিবৃতিতে ভন ডার লিয়েন বলেন, আজ আমরা কঠিন একটি বছরের পাতা উল্টে দিচ্ছি। কভিড-১৯-এর ভ্যাকসিন ইউরোপীয় ইউনিয়নের সব রাষ্ট্রে পাঠানো হয়েছে। আগামীকালই ইউরোপজুড়ে ভ্যাকসিন কার্যক্রম চালু হচ্ছে। ইইউর এ ভ্যাকসিন কার্যক্রম ঐক্যের এক হূদয়স্পর্শী মুহূর্ত। এর মধ্য দিয়েই আমরা মহামারী থেকে মুক্তি পাব।
এদিকে, জার্মানির স্বাস্থ্যমন্ত্রী এ খবরের প্রতিক্রিয়ায় বলেন, বড়দিনের ছুটিতে এটি একটি দারুণ খবর। এ মুহূর্তে ইউরোপজুড়ে ভ্যাকসিনের লরিগুলো ছড়িয়ে পড়ছে। জার্মানির প্রতিটি প্রদেশে পৌঁছে যাচ্ছে ভ্যাকসিন। আগামীকালও ডেলিভারি অব্যাহত থাকবে। এ ভ্যাকসিনই হবে মহামারীকে হার মানানোর প্রধান অস্ত্র। এটিই আমাদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে নিতে পারবে।
ইতালির পররাষ্ট্রমন্ত্রী লুইগি ডি মাইয়ু দেশের মানুষদের ভ্যাকসিন গ্রহণের আহ্বান জানান। তিনি বলেন, আমরা আমাদের স্বাধীনতা ফিরে পাচ্ছি। আমরা আবারো একে অপরকে জড়িয়ে ধরতে পারব।
হাঙ্গেরিতে প্রথম টিকা গ্রহণ করেছেন ডেল পেস্ট সেন্ট্রাল হাসপাতালের এক চিকিৎসক। স্লোভাকিয়া সরকারও জানিয়েছে, তারা তাদের নাগরিকদের টিকা প্রদান করছে।
ইইউর গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য অংশীদার চীন, রাশিয়া, কানাডা, যুক্তরাষ্ট্র, সিঙ্গাপুর ও সৌদি আরবও নিজ নিজ দেশে ভ্যাকসিন কর্মসূচি চালু করেছে।