মোঃ আশেক উল্লাহ ফারুকী,টেকনাফ:
চোরাচালান জাতীয় অর্থনীতিকে সমূলে ধ্বংস করে ফেলে এবং দেশের উন্নয়নের অগ্রগতির সচল চাকা অচল করে দেয়। চোরাচালানের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রীর ঘোষিত জিরো টলারেন্স নীতির প্রতি বিজিবি অটল অবস্থায় এ দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে। চোরাচালানের বিপরীতে যে সব পণ্য অবৈধ পথে প্রবেশ করে। তার মধ্যে অধিকাংশ আমদানি নিষিদ্ধপণ্য। এসব অবৈধ পণ্য প্রবেশের ফলে দেশীয় পণ্যাদীর উৎপাদনকারীরা নিরুৎসাহিত এবং আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে পড়ে। চোরাচালান হচ্ছে, দেশ ও জাতীর জন্য একটি অভিশাপ। আজ বেশীরভাগ যুব সমাজ এ পথে ধাবিত হয়ে ওরা নৈতিক অবক্ষয়ের দিকে চলে যাচ্ছে। চোরাচালান এবং মাদকের আগ্রাসন থেকে পরিত্রান বিষয়ে ৫ সেপ্টেম্বর সকাল ১১ টায় টেকনাফ ২ বর্ডার গার্ড এর অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল মহিউদ্দীন খানের দপ্তরে এ প্রতিবেদক মুখোমুখি হয়ে এক সৌজন্য স্বাক্ষাতে মিলিত হলে তিনি উপরোক্ত কথাগুলো বলেন। অত্যান্ত সদালাপী ও হাস্যউজ্জল ও সাংবাদিক বান্ধব অধিনায়কের আলাপ চারিতা কালে তিনি বলেন, সীমান্তের ৫৪ কিলোমিটার এ দীর্ঘ নাফ-নদীর উপকূলীয় এলাকা চোরাচালান, মাদকসহ দস্যুতা দমনে বিজিবির সদস্যরা সীমান্তে অতন্দ্রপ্রহরী এবং জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। ঝড় বৃষ্টি ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ উপেক্ষা করে বিজিবি এ পেশাদারিত্ব নিরলসভাবে পালন করে যাচ্ছে। চোরাচালানের বিপরীত বেশীরভাগ চোরাইপণ্যের মধ্যে শীর্ষে মাদকদ্রব্য এবং ইয়াবা উল্লেখিযোগ্য। ১৯৯২ সালে ইয়াবা আগমন ঘটার পর এর বিস্তৃতি লাভ করে এবং ২০১৭ সালে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের পর আরও একটি ভয়ংকর মাদকের রাজা ক্রিস্টাল মেথ নামে আইস যুক্ত হলো।যা নিয়ে পুরো সীমান্ত এলাকা জোড়ে সচেতন নাগরিকদের মধ্যে চলছে আতংক ও হতাশা। মাদকের কালোটাকার প্রভাব বিপত্তিতে আইন শৃংখলা পরিস্থিতি অবনতি ঘটিয়ে ওরা গোলাও পানিতে মাছ শিকার করছে। এরি ফলে সীমান্ত এলাকায় হত্যা,অপহরণ,দস্যুতা, মানব পাচার, ডাকাতি সহ নানা অপকর্ম আবির্ভাব ঘট। মাদক কী? এটি সকল অপকর্ম এবং অশ্লীলতার মূল? এমন প্রশ্ন করা হলে অধিনায়ক বলেন, অবশ্যই মাদক হচ্ছে, সকল অপকর্মের মূল। চোরাচালান এবং মাদকের আগ্রাসন থেকে বাঁচতে হলে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। যদিও বিজিবির উপর এ দায়িত্ব অর্পিত হলেও নাগরিক হিসাবে বিজিবিকে সহযোগিতা নিত্যন্ত কর্তব্য বলে আমি মনে করি। বিশেষ করে চোরাচালান ও মাদক দমনে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের ভূমিকা অনস্বিকার্য্য। চোরাকারবারীরা অভিনব কৌশল ও পন্থা অবলম্বন এবং পরিবর্তন করে সীমান্তের এসপাশ্ব কতর স্থল ও নৌপথ ব্যবহার করে সংশ্লিষ্ঠদের অগোচরে চোরাইপণ্য ও মাদক নিয়ে আসছে। রোহিঙ্গা ও স্থানীয় দস্যুদের যোগসাজশ এবং পাহারা দিয়ে মাদকের বড় বড় চালান নিয়ে আসে। নব-নিযুক্ত অধিনায়ক দায়িত্বভার গ্রহণের পর হতে চলতি বছর-২০২৩ সালের ২৮ মার্চ হতে ৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৬ মাসে সীমান্তের ৫৪ কিলোমিটার পৃথক চোরাচালান বিরোধী অভিযান পরিচালনা করে ১৫৬ জন আসামীসহ তিনশত ৬৮ কোটি আটাশ লাখ ৭ হাজার ১৮২ টাকা দামের ইয়াবা ক্রিস্টাল মেথ আইস, বিয়ার, বিদেশি মদ, বাংলা মদ, গাঁজা, ফেনসিডিল, হিরোইন, স্বর্ণ, এলজি, তাজা কার্তুজসহ বিভিন্ন ধরনের মালামাল আটক ও জব্দ করা হয়।