কক্সবাজার শহরের নুনিয়ারছড়া ঘাটে একটি মাছ ধরার ট্রলারে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে ওই ট্রলারে থাকা ১২ জন জেলে দগ্ধ হয়েছেন। ছয় নম্বর ঘাটে নোঙর করা ট্রলারটিতে ১৮ জন জেলে ছিলেন। শুক্রবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে এফবি লাকি নামের ট্রলারটিতে এ বিস্ফোরণ ঘটে।
বিস্ফোরণের সময় তাদের মধ্যে কয়েকজন ঘুমে ছিলেন। কয়েকজন চা বানাচ্ছিলেন। বিস্ফোরণে ১০ জনেরই শরীরের ৭০ শতাংশ পুড়ে গেছে।
ট্রলারের সাব-মাঝি মুহাম্মদ কামাল জানান, ট্রলারে চারটি গ্যাস সিলিন্ডার ছিল। চারটি সিলিন্ডারই বিস্ফোরিত হয়েছে।
এতে দগ্ধ জেলেরা হলেন-আইয়ুব, দীল মোহাম্মদ, রফিক, মনির, শফিকুল, আরমান, রহিম, রহিমুল্লাহ, শাহিন, ওসমান, আলী আকবর ও দুলাল মাঝি। তাদের উদ্ধার করে প্রথমে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ও পরে অবস্থা আশঙ্কাজনক হলে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়।
কক্সবাজার সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) আশিকুর রহমান বলেন, ১০ জনেরই শরীরের ৭০ শতাংশ পুড়ে গেছে। তাদের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বাকি দুজনের শরীরের ৩০ শতাংশ পুড়ে গেছে। তাদের কক্সবাজার সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
কক্সবাজার সদর থানার ওসি মো. রফিকুল ইসলাম জানান, দগ্ধ সবাই মো. সেলিমের মালিকানাধীন দুলাল মাঝির মাছ ধরার ট্রলারের জেলে। তারা কক্সবাজার শহরের ১ নম্বর ওয়ার্ড কুতুবদিয়াপাড়া ও সমিতিপাড়ার বাসিন্দা।
ট্রলারের সাব-মাঝি মুহাম্মদ কামাল বলেন, সাগরে ৯ দিন থাকার পর মাছ নিয়ে ট্রলারটি বৃহস্পতিবার বিকালে শহরের ৬ নম্বর ঘাট এলাকায় নোঙর করা হয়। পরে যার যার মতো চলে যায়। শুক্রবার সকালে ট্রলারে কয়েকজন মাঝি-মাল্লা ঘুমাচ্ছিলেন। আমি আর দুজন ট্রলারের সামনের অংশে কাজ করছিলাম। দু-একজন জেলে গ্যাসের চুলায় চা বানাচ্ছিলেন। তখন হঠাৎ বিকট শব্দ শুনে সবাই আতঙ্কিত হয়ে পড়ি।
চট্টগ্রাম ব্যুরো জানায়, চমেক হাসপাতাল পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম আহসান বলেন, দগ্ধদের মধ্যে ৩০ বছর বয়সি রহিম ও ৩৬ বছরের দীল মোহাম্মদের শরীর ৯০ শতাংশ পুড়ে গেছে। বাকিদের মধ্যে আরমানের ৭০ শতাংশ, আইয়ুব আলীর ৬৫ শতাংশ, শাহীনের ৬০ শতাংশ, ওসমান গনির ৬০ শতাংশ পুড়ে যায়। ভর্তি হওয়া সবার অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাদের চিকিৎসায় প্রয়োজনীয় নার্স ও ডাক্তার নিয়োজিত করা হয়েছে।
মাধবপুরে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ : মাধবপুর (হবিগঞ্জ) প্রতিনিধি জানান, মাধবপুরে গ্যাস সিলিন্ডারের দোকানে বিস্ফোরণের পর অগ্নিকাণ্ডে চার ব্যবসায়ীর দোকান পুড়ে আনুমানিক ২০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। শুক্রবার দুপুরে আন্দিউড়া ইউনিয়নের চকবাজারে এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানান, দুপুর দেড়টার দিকে হঠাৎ করে ব্যবসায়ী নন্দন দেবের গ্যাস সিলিন্ডারের দোকানে বিকট শব্দে আগুনের লেলিহান শিখা উপরের দিকে জ্বলতে দেখা যায়। এসময় আগুন মুহূর্তের মধ্যেই সজল দেবের মুদি দোকান, অসীম দেবের ফার্মেসি, অমর ঠাকুরের কম্পিউটারের দোকানে ছড়িয়ে পড়ে। বিস্ফোরণের বিকট শব্দে বাজারের ব্যবসায়ী ও স্থানীয় বাসিন্দারা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। মাধবপুর ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে এক ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন।
মাধবপুর ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার মনতোষ মল্লিক বলেন, বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়েছে। তবে দোকানে গ্যাস সিলিন্ডার থাকায় অগ্নিকাণ্ডের মাত্রা ও তীব্রতা বেশি ছিল।