দৈনিক জনকণ্ঠ অবলম্বনে
চাঞ্চল্যকর সাইফ উদ্দিন মার্ডার নিয়ে বিভিন্ন জল্পনা -কল্পনা চলছে।অনেকের মধ্যে বিভিন্ন প্রশ্নও ঘুরপাক খাচ্ছে।পুরনো রোহিঙ্গার ছেলে ১৮ বছর বয়সের একজন কিশোর কি করে সুঠাম দেহের অধিকারী আওয়ামীলীগ নেতা সাইফুদ্দীনকে হত্যা করতে পারে?
একজন প্রশ্ন করে বলেন,মাত্র সাত দিনের পরিচয়ে আশরাফুল নিজ ইচ্ছেমাফিক সাইফুদ্দীনের সঙ্গে হোটেল সানমুনে গিয়েছিল।
এই সাতদিনে ফেসবুকে মেসেঞ্জার চ্যাটিংয়ে দুজনের মধ্যে নান রকম কথোপকথন হয়।এর প্রেক্ষিতেই যদি হোটেলে যায় তাহলে সমকামিতাই আশরাফুলের সম্মতি ছিল অবশ্যই।
আশরাফুল জবানবন্দিতে বলেছে,হোটেল থেকে বের হওয়ার পর গোলদীঘির পাড়ে তাকে ১০০ টাকা দিয়ে বিদায় করে দেয় সাইফুদ্দিন।শর্ত অনুযায়ী তাকে আরও বেশি টাকা দেওয়ার কথা ছিল,কিন্তুু দেয়নি।এরপর আশরাফুল মাদ্রাসায় ফিরে যায়।
তাহলে আশরাফুল কি টাকার বিনিময়ে স্ব-ইচ্ছায় সমকামিতা করেছিল?
আশরাফুলের দাবি,সাইফুদ্দীন ঘন্টাখানেক পর তাকে আবার হোটেলে আসতে বলে,কিন্তুু আশরাফুল অনিচ্ছা প্রকাশ করায় পূর্ববর্তী সময়ের ভিডিও পাঠিয়ে ব্ল্যাকমেইল করে হোটেলে আসতে বাধ্য করে।
যদি সেটা সত্যি হয়ে থাকে,তাহলে আশরাফুল সহজেই আইনের আশ্রয় নিতে পারত অথবা না যেয়ে পারত।সে কেন চাকু নিয়ে হোটেলে গিয়ে হত্যা করার সাহস করল?
এখানে স্পষ্ট যে একজন ৯০ কেজি ওজনের পাঁচ ফিট সাত ইঞ্চি লম্বা সুঠাম দেহের যুবক কে ১৭ টি ছুরিকাঘাত করে,কোমরের বেল্ট খুলে হাত বেধে আবার, মুখে বালিশ চেপে হত্যা করল মাদ্রাসাপড়ুয়া কিশোর আশরাফুল। খুন করার পর এক ফোটা রক্তের দাগ গায়ে না লাগিয়ে সাদা পাঞ্জাবি পড়ে স্বাভাবিকভাবে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন আশরাফুল।
একজন সাধারণ ছেলের পক্ষে এটি কি কখনো সম্ভব?
ব্ল্যাকমেইলের ভয়ে আশরাফুল যদি হোটেল যায়,তাহলে সে অবস্থা বোঝে মোবাইলটি নিয়ে লাপাত্তা হতে পারত অথবা প্রতিশোধপরায়ণ হয়ে বেশ কয়েকটা ছুরিকাঘাত করে মোবাইল নিয়ে চলে আসতে পারত।কিন্তুু সে কেন মৃত্যু নিশ্চিত করলো?
আশরাফুল যদি আত্নরক্ষার্থে খুন করার মতো প্রস্তুতি নেয় তাহলে সে খুন করার পর থানায় এসে আত্মসমর্পণ করে নাই কেন? নিশ্চয় এই খুনের পিছনে রহস্য আছে।
একাধিক ব্যাক্তি ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকতে পারে বলে ধারণা করেছেন স্থানীয়রা।
পুলিশ সুপারের বক্তব্য ও মামলা ভবিষ্যত নিয়ে এক আইনজীবী বলেন,সাইফুদ্দীন হত্যার পর আসামিকে দ্রুত গ্রেফতার করায় নিঃসন্দেহে পুলিশ প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানাই।
একজন আসামির বক্তব্যের ভিত্তিতে সংবাদ সম্মেলন,এতে হত্যাকান্ডের ন্যায়বিচার হতে বঞ্চিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
পুলিশ সুপারের বক্তব্যটি দ্বারা আসামি দন্ডবিধির ১০০ ধারামতে সেল্ফডিফেন্সের সুযোগ পাবে।এখানে দন্ডবিধির ধারামতে কামনা-চরিতার্থ করার জন্য আঘাত করা হলে ভিক্টিম প্রাইভেট ডিফেন্সের সুযোগে মৃত্যু ঘটাতে পারে।
সূত্রে জানাই পরিকল্পিত এই হত্যাকান্ডের পেছনে কারা, কেন,কি উদ্দেশ্য জড়িত ছিল সেটা
আইনসংগতভাবে গণমাধ্যমের মুখোমুখি করা এখন সময়ের দাবী। কারণ ঘটনাটি আসলে কি জানতে চায় জাতি।
একইসাথে কোন অদৃশ্য শক্তির ইশারায় এই ঘটনাটি ঘটেছে তারা এখন কোথায়?কি করছেন? তা ক্ষতিয়ে দেখে আইনের আওতায় আনা এখন সময়ের দাবী।
একইসাথে সাইফুদ্দীন হত্যাকান্ডের পর খুনের মাস্টারমাইন্ড আশরাফুলের প্রানবন্ত হাসি কি বুঝাতে চেয়েছেন তাও পরিষ্কার করা দরকার।
খুনের সন্দেহে শহরের পাহাড়তলি থেকে আটক নয়ন আসলেই এই হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত কি-না, নাকি ঘটনা ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে অন্য কোন কাহিনি ঘটেছে তাও সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে। করাগারে কে কাকে দেখতে যায়,পিসিতে টাকা দেয় সুখ দুঃখের তদবির করে তা অদৃশ্য নজরদারি রাখতে হবে।
উল্লেখ্য,এই হত্যাকান্ডে জড়িত থাকার সন্দেহে আরো চার জনকে আটকের পর জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ। তদন্ত চলছে,চলবে,আরও চলবে,শেষ সত্য উদঘাটন না হওয়া পর্যন্ত চলবে বলে জানিয়েছেন ন্যায়ের প্রশ্নে আপোষহীন অসীম সাহসী কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মাহফুজ সহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
সাইফুদ্দীনের পরিবারে চলছে শোকের মাতম, অবুঝ সন্তানরা চোখের জলে খুজছে জন্মদাতা পিতা।
সাইফুদ্দীনের প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন,প্রধানমন্ত্রী স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও দায়িত্বশীল বিবেকবান আইনশৃঙ্খলা বাহিনি জেনে শুনে যদি এই ঘটনায় জড়িত কাউকে ছাড় দেন মানুষের দীর্ঘশ্বাস অভিশাপ লেগেই থাকবে আমৃত্যু।
অপরাধীর পক্ষে রাজনৈতিকদের রাম রাজত্বে অনেকটা প্রকৃত আওয়ামীলীগ শুন্য হয়ে পড়বে কক্সবাজার।আগামী সংসদ নির্বাচনে পড়বে তার প্রভাব। পর্যটনের ক্ষতি হবে অপূরনীয়।
কক্সবাজারের মাদক দখল-বেদখল খুন গুম হামলা মামলা অপ্রতিরোধ্য হয়ে পড়বে।
সূত্র -দৈনিক জনকণ্ঠ অবলম্বনে