ফয়সাল হাওলাদার :
দৈনিক ময়মনসিংহ প্রতিদিন পত্রিকার সম্পাদক খায়রুল আলম রফিককে ডিবি হেফাজতে নিয়ে অমানুষিক নির্যাতনের অভিযোগে তৎকালীন ময়মনসিংহ জেলা গোয়েন্দা সংস্থা ডিবি পুলিশের এসআই আক্রাম হোসেন ও জুয়েল নামের এক পুলিশ সদস্য সহ অজ্ঞাত আরো ৭/৮ জন নাম উল্লেখ করে জেলা ময়মনসিংহের বিজ্ঞ জেলা ও দায়রা জজ বাহাদুর আদালতে মামলা দায়ের করা হয়। মামলাটি গত
বৃহস্পতিবার (১৪ জানুয়ারি) সাংবাদিক খায়রুল আলম রফিকের পক্ষে আইনজীবি এ্যাডভোকেট খায়ের আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। আজ ১৮ জানুয়ারী দুপুরে এক আদেশে বলেন, সাংবাদিক খায়রুল আলম রফিককে ২৪ ঘন্টার মধ্যে একজন রেজিস্টার্ড চিকিৎসকের মাধ্যমে স্বাস্থ্য পরীক্ষার রিপোর্ট বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করার নির্দেশ প্রদান করেন। কেন্দ্রীয় কারাগারে চিকিৎসারত সকল কাগজপত্র তলব করেন।
নির্যাতন এবং হেফাজতে মৃতু্ (নিবারন) আইন ২০১৩ এরে ১৩(১), ২(খ), ১৫ (১) ও ১৫ (৩) ধারায় এই মামলা করা হয়। বিজ্ঞ আদালত অভিযোগ আমলে নিয়ে বাদী সাংবাদিক খায়রুল আলম রফিকের জবান বন্দী রেকর্ড করেছেন। বাদীপক্ষের আইনজীবী এ্যাডভোকেট খায়ের এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, এসআই আকরাম হোসেন তাকে আটক করে ডিবি হেফাজতে রাখার নামে অকথ্য নির্যাতন চালায় যা মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন। আক্রামের যোগসাজশে ষড়যন্ত্রমূলক ৩টি মামলায় গ্রেফতার হয়ে দীর্ঘ দুই মাস থাকতে হয় ময়মনসিংহ কেন্দ্রীয় কারাগারে । এরআগে তার চোখ বেঁধে অকথ্য নির্যাতন করে এসআই আকরাম হোসেন বলে অভিযোগ করেন তিনি ।
এসআই আকরামের বিরুদ্ধে সাংবাদিক রফিক ইতিমধ্যে পুলিশের ‘আইজিপি’স কমপ্লেইন মনিটরিং’ সেলে একটি অভিযোগ জমা দিয়েছেন। যার অভিযোগ নম্বর SL-17 এবং তারিখ ৫ই জানুয়ারি ২০২১।
অভিযোগ পত্রে তিনি জানান, ২০১৮ সালের ২৯ নভেম্বর রাত ১১টার দিকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল গেইটের বিপরীত দিকে আমি অবস্থান করছিলাম । এসআই আকরামের নেতৃত্বে ডিবি পুলিশ আমার চোখ বেঁধে একটি কালো গাড়িতে করে আমার পত্রিকার কার্যালয়ে নিয়ে যায় । সেখানে থাকা আমার জমি ক্রয়ের দলিল, জনতান ব্যাংকের চেক ও কম্পিউটার জব্দ করে । দলিল ও ব্যাংক চেক,ভোটার আইডি কাড প্রতিপক্ষের কাছে তুলে দিয়ে জব্দ দেখানো হয় শুধু কম্পিউটার । সেখান থেকে আমাকে নেয়া হয় ময়মনসিংহের ব্রহ্মপুত্র পুরাতন গুদারাঘাটস্থ দুর্গম চর এলাকায় । দুচোখ বেঁধে দু হাত পেছনে বেঁধে নির্যাতন চালানো হয় ।
কিন্তু দুই বছর পরে কেন বিষয়টি সামনে এনেছেন এমন প্রশ্নে সাংবাদিক রফিক বিডি২৪লাইভকে জানান, তিনি ঘটনাটি চক্ষু লজ্জার কারনে সামনে আনতে পারেননি এতদিন। তিনি জানান গত বছরের ডিসেম্বরে ২২ তারিখে অজ্ঞাত কোন এক ব্যাক্তি তার ম্যাসেঞ্জারে চোঁখ বাঁধা ছবি প্রদান করেন। যা দেখে তিনি আতঁকে উঠেন এবং সেই সব নির্যাতনের দৃশ্যগুলো চোখের সামনে ভাসতে শুরু করে। এর পরপরই তার এই ছবি ফেসবুকে ভাইরাল হতে শুরু করে। একারনেই দুইবছর পর মুখ খুললেন বলে জানান তিনি।
এস আই আকরাম হোসেন জানান, আমি সাংবাদিক রফিককে আটক করেনি। কে আটক করেছে আমি জানিনা। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা তিনি বলতে পারবেন।