মোঃ ওসমান গনি ইলি :
অতিরিক্ত মদপান করে মাদ্রাসা ছাত্র আশরাফুলকে যৌন নির্যাতন করতে গিয়ে খুন হয়েছেন পৌর আওয়ামী লীগের নেতা সাইফ উদ্দিন।
সোমবার রাতে টেকনাফের হোয়াইক্যং থেকে আশরাফুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করেছেন পুলিশ।
পুলিশ সুপার মাহফুজুল ইসলাম বলেন, ভুক্তভোগী ও ঘাতক পূর্বের পরিচিত।
সে সুবাধে তাদের মধ্যে ঘনিষ্ট সম্পর্ক গড়ে ওঠে। কিন্তু যখন সম্পর্কটি মোবাইলে ধারণ করে, তখন আশরাফুল ক্ষিপ্ত হয়ে পড়েন।
একপর্যায়ে সে হত্যার পরিকল্পনা করে। মদ খাওনোর পর চাদর দিয়ে মুখ চাপা দেয়, বেল্ট দিয়ে হাত-পা বেঁধে ফেলেন। তারপর ছুরি দিয়ে গলা কাটার চেষ্টা করেন। একপর্যায়ে সে ভিডিও ধারণকৃত মোবাইলটা আলামত নষ্টের জন্য ভেঙে ফেলেন।
তিনি আরও বলেন, ভেঙে ফেলা মোবাইল, ব্যবহৃত ছুরি, ভিকটিমের মোটরসাইকেলটি উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় তদন্ত করা হচ্ছে। এটি প্রাথমিক স্থর। পুলিশ আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করবে সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে। তদন্ত চলছে, আরও চলবে।
আওয়ামী লীগ নেতা সাইফ উদ্দিনের এক দু ‘সম্পর্কের আত্মীয়ের মাধ্যমে পরিচয় হয় হাফেজ আশরাফুল ইসলামের। সেই পরিচয় আরো ঘনিষ্ঠ করে রোববার বিকেলে বড় বাজার থেকে দেশীয় মদ ও পেয়ারা কিনে হলিডে মোড়ের হোটেল সানমুনের ২০৮ নম্বর কক্ষে উঠেন তারা।
সেখানে দেশীয় মদ ও পেয়ারা খাইয়ে মাদ্রাসা ছাত্র আশরাফুলকে এক পর্যায়ে যৌন নির্যাতন করে সাইফ উদ্দিন। যৌন নির্যাতন করে সাইফ সেই ভিডিও ধারণ করেছে নিজের মোবাইলে। পরে বাইকে করে গোলদিঘির পাড়ে নামিয়ে দিয়ে ১০০ টাকা দিয়ে চলে যেতে বলে।
এর এক ঘন্টা পর আবারও ফোন করে হোটেলে ডাকে সাইফ। সেখানে আবারও চেষ্টা করা হয় যৌন নির্যাতনের। তখন এক পর্যায়ে নিজের উপর যৌন নির্যাতনের প্রতিশোধ নিতেই আওয়ামীলীগ নেতা সাইফ উদ্দিনকে হত্যা করে মাদ্রাসা ছাত্র আশরাফুল ইসলাম।
সোমবার রাতে টেকনাফের হোয়াইক্যং থেকে আশরাফুল ইসলামকে গ্রেপ্তারের পর মঙ্গলবার প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান কক্সবাজার পুলিশ সুপার মাহফুজুল ইসলাম।
এর আগে গেল সোমবার সকাল ১০টার দিকে শহরের হলিডের মোড়ে ‘সানমুন’ আবাসিক হোটেলের ২০৮নং কক্ষে সাইফ উদ্দিনের মরদেহ পাওয়া যায়।
নিহত সাইফ উদ্দিন পৌর আওয়ামী লীগের সাবেক দুর্যোগ ও ত্রাণবিষয়ক সম্পাদক ছিলেন। তার বাড়ি শহরের ঘোনারপাড়া এলাকায়। ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ গণমাধ্যমের প্রকাশের পর থেকে চারদিকে হইচই পড়ে যায়। প্রকাশ্যে আসে আশরাফুলের পরিচয়।
এদিকে পুলিশ সুপারের দেওয়া বক্তব্য প্রত্যাখান করে নিহত সাইফুদ্দীনের ছোট ভাই মহিম গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকান্ড।
একজন আশরাফুলের পক্ষে কোন অবস্থায় আমার ভাইকে হত্যা করা সম্ভব নই।
এতে আরও কেউ জড়িত থাকতে পারে।
তাই তিনি মামলাটি সঠিক তদন্তের প্রকৃত খুনিদের আইনের আওতায় আনতে সংশ্লিষ্টদের অনুরোধ জানান।