মাদক কোন সমস্যার সমাধান করে না বরং বাড়াই।মানসিক ও শারীরিক শান্তির আশা কিংবা অন্য কোন ভুল ধারনা নিয়ে যারাই এই জগতে পা বাড়িয়েছে তারাই ডুবে মরেছে।যৌনশক্তি বাড়ার আশায় যেসব তরুণ-তরুনী বা অন্য যে কোন বয়সের মানুষ মাদক ছুয়েছেন তারাই চির তরে হারিয়েছেন যৌবন।শুধু তাই নই ভয়ংকর আত্মঘাতী মাদকের কারনে আজ সারা পৃথিবী তাল-মাতাল।চাতুর্যপূর্ণ বিভ্রান্তিকর প্রচন্ড শক্তিশালী এই মাদকের কাছে রাজা-প্রজা সবাই অসহায়।বাড়ছে নৈরাজ্য।যদি কেউ মনে করেন আমি তো প্রতিদিন খাব না একবার খেয়ে দেখি মনে রাখতে হবে নেশার প্রথম টানই সর্বনাশের পথ তৈরি করে। শুধু ইসলাম নই সকল ধর্মে মাদকের ব্যাপারে রয়েছে কঠিন নিষেধাজ্ঞা। মাদক সেবনের ফলে যে সব সমস্যা গুলো হয় তৎমধ্যে উল্লেখযোগ্য সমস্যা গুলো যতটুকু সম্ভব নিম্নে দেওয়া হল।
১/ নিয়মিত প্রচুর মাদকদ্রব্য সেবনে মানব মেধা সম্পূর্ণরূপে বিনষ্ট হয়ে যায়।
২/ এরই মাধ্যমে সমাজে বহু প্রকারের খুন ও হত্যাকাণ্ড বিস্তার লাভ করে। তথা সামাজিক সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা বিঘ্নিত হয়।
৩/ এরই মাধ্যমে অনেক পবিত্র চরিত্রবিশিষ্টা
পুরুষ-মহিলার ইজ্জত বিনষ্ট হয়। বাড়ে পরকিয়া সহিংসতা।মাদকের কারনেএকজন সুস্থ মানুষ নিজের অজান্তে দিনকে রাত মনে করে।মানুষকে মানুষ বলেই জানে না।দম্ভ অহংকার অঙ্গভঙ্গি এতই পরিবর্তন হয়ে যাই যে,তিনি কি করছেন,কি বলছেন তা তিনি নিজেও জানেন না।একারনে দিন দিন সকল প্রকারের অপকর্ম, ব্যভিচার ও সমকাম বেড়েই চলছে। এমনো শোনা যায় যে, অমুক মদ্যপায়ী নেশার তাড়নায় নিজ মেয়ে, মা অথবা বোনের সঙ্গে ব্যভিচারে লিপ্ত হয়েছে। এমন অঘটন করতে তো মুসলিম দুরে থাক, অনেক সুস্থ বিবেক সম্পন্ন ইয়াহূদী, খ্রিষ্টান, হিন্দু এবং বৌদ্ধও লজ্জা পায়।
৪/ মদ্যপায়ী ব্যক্তি কখনো কখনো নেশার তাড়নায় তার নিজ স্ত্রীকেও তালাক দিয়ে দেয়, অথচ সে তখন তা এতটুকু অনুভবও করতে পারে না। মূলত এ জাতীয় ব্যক্তির মুখে তালাক শব্দ বেশির ভাগই উচ্চারিত হতে দেখা যায়। আর এমতাবস্থায় সে তার তালাকপ্রাপ্তা স্ত্রীর সাথে সহবাস করার দরুন তা ব্যভিচার বলেই পরিগণিত হয়।
৫/ এরই পেছনে কতো কতো মানব সম্পদ যে বিনষ্ট হয় তার কোনো ইয়ত্তা নেই। মাদকসেবীরা কখনো কখনো এক টাকার নেশার বস্তু একশ টাকা দিয়ে কিনতেও রাজি। তা হাতের নাগালে না পেলে তারা ভারী অস্থির হয়ে পড়ে।
৬/ এরই মাধ্যমে কোনো জাতির সার্বিক শক্তি ও সম্ভাবনাময় ভবিষ্যৎ বিনষ্ট হয়। কারণ, যুবকরাই তো জাতির শক্তি ও ভবিষ্যৎ। মাদকদ্রব্য সেবনের সুবাদে বহুবিধ অঘটন ঘটিয়ে কতো যুবক যে আজ জেলহাজতে রাত পোহাচ্ছে তা আর কারোর অজানা নেই।
৭/ এরই কারণে কোনো জাতির অর্থনৈতিক, সামরিক ও উৎপাদন শক্তি ধ্বংসের সম্মুখীন হয়। কারণ, এ সকল ক্ষেত্র তো স্বভাবত যুবকদের উপরই নির্ভরশীল। ইতিহাসে প্রসিদ্ধ যে, খ্রিষ্টীয় ষোড়শ শতাব্দীতে চাইনিজ ও জাপানীরা যখন পরস্পর যুদ্ধের সম্মুখীন হয় তখন চাইনিজরা পরাজয় বরণ করে। তারা এ পরাজয়ের খতিয়ান খুঁজতে গিয়ে দেখতে পায় যে, তাদের সেনাবাহিনীর মাঝে তখন আফিমসেবীর সংখ্যা খুবই বেশি ছিলো। তাই তারা পরাজিত হয়েছে।
৮/ মাদকদ্রব্য সেবন করার অনেকগুলো শারীরিক ক্ষতিও রয়েছে। তম্মধ্যে ফুসফুস প্রদাহ, বদহজমী, ব্যথা, অনিদ্রা, অস্থিরতা, খিঁচুনি ইত্যাদি অন্যতম। এ ছাড়াও মাদক সেবনের দরুন আরো অনেক মানসিক ও শারীরিক রোগের প্রাদুর্ভাব ঘটে। যা বিস্তারিত বলার অবকাশ রাখে না।
৯/ মাদকদ্রব্য সেবনের মাধ্যমে হিফাযতকারী ফিরিশ্তাদেরকে কষ্ট দেওয়া হয়। কারণ, তারা এর দুর্গন্ধে কষ্ট পায় যেমনিভাবে কষ্ট পায় মানুষরা।
১০/ মাদকদ্রব্য সেবনের কারণে মাদকসেবীর কোনো নেক ও দো‘আ চল্লিশ দিন পর্যন্ত কবুল করা হয় না। মৃত্যুর সময় মাদকসেবীর ঈমানহারা হওয়ার প্রচুর সম্ভাবনা থাকে।এছাড়া মাদকের আরও অপকার ছাড়া উপকারের কিছু নেই।একজন মাদক সেবীর সর্বশেষ ঠিকানা কবর,পাগলা গারদ বা জেলখানা।