ইসলামাবাদ কাজী অফিসের নিবন্ধন বই জব্দ
৭ই আগস্ট ২০২৩ ইংরেজি, সোমবার, কক্সবাজার জেলা, নবগঠিত ঈদগাঁও উপজেলা ইসলামাবাদ, পূর্ব বোয়াল খালি বাল্য বিবাহ বন্ধ করে মেয়ের চাচাকে ৩০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড করেন ঈদগাঁও ইউএনও।
ইউএনও’র ফেইসবুক স্ট্যাটাসে যা লিখা হয়েছে হুবহু নিম্নে তোলে ধরা হলো।
বেরসিক ম্যাজিস্ট্রেট এবং একটি নামন্ত বিয়ে।
উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের কারণে সৃষ্ট বন্যা পরিস্থিতি দুটি ইউনিয়নে পরিদর্শন করে যখন অফিসে এসে পৌছাই তখন বেলা দুটো। অত:পর হোটেল থেকে আনা ডিম খিচুড়ি ভক্ষণ করে যখন দাপ্তরিক কাজ করছি তখন খবর পেলাম ইসলামাবাদ ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডে ১৫ বছর বয়সী এক মাদ্রাসার ছাত্রীর বিয়ে হচ্ছে, সাথে সাথে সংশ্লিষ্ট চেয়ারম্যান ও মেম্বারকে কল দিয়ে সত্যতা যাচাই করে নিলাম। অগ্যতা চেয়ারম্যান সাহেব আসলে সংগে নিয়ে বিয়ে বাড়ির দিকে যাত্রা করি, মেইন রোড থেকে নেমে ভিতরের রোডে প্রবেশ করতেই দেখি বরের গাড়ি ও বরযাত্রীর বহর। সাথে সাথে গাড়ি থামিয়ে জিজ্ঞেস করতেই দেখি চক্ষু চড়কগাছ, বউ আছে কিন্তু বর নাই। কণের সাথে থাকা ভদ্রমহিলাকে পরিচয় জিজ্ঞেস করতেই বললো তিনি বরের মা। বরের কথা জিজ্ঞেস করলে, জানালেন বর বাড়িতে এবং এইভাবে নাকি বিয়ের প্রচলন আছে। যাই হোক মেনে নিয়ে বললাম বিয়ের কাগজপত্র এবং মেয়ের জন্ম-নিবন্ধন দেখান। কিন্তু সেটা আর দেখা হয়ে উঠেনা। ইতোমধ্যে সহজ সরল কাজি সাহেবকে সংবাদ দিয়ে আনা হয়, আসার সময় বিয়ের কাবিন-রেজিস্ট্রারসহ আনলে রেজিস্ট্রার চেক করে দেখা যায়, বাল্য বিবাহ পড়ানোর এই অপরাধ উনি দীর্ঘদিন করে আসছেন। কাজি সাহেবের রেজিস্ট্রার জব্দ করে আনা হয় এবং বাল্য বিবাহ এর সাথে জড়িত থাকায় মেয়ের চাচাকে (বাবা প্রবাসী) বাল্য বিবাহ নিরোধ আইন ২০১৭ সংশ্লিষ্ট ধারা লংঘনে ৩০,০০০ (ত্রিশ) হাজার টাকা অর্থদণ্ড প্রদান করা হয়। একই সাথে মেয়ের চাচা ও বরের মা’র থেকে মুচলেকা নেয়া হয় এবং মেয়েকে তার নিজ বাড়িতে পাঠিয়ে দিয়ে সংশ্লিষ্ট মেম্বার সাহেবকে নজরদারি রাখার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়।
উল্লেখ্য, ইসলামাবাদ ইউনিয়ন কাজী অফিসে নামধারী কএকজন কাজী রয়েছে, যারা নিয়োগকৃত কাজী আজীমের চত্রছায়ায় নাইক্ষ্যংদিয়া এস টি দাখিল মাদ্রাসার শিক্ষক মাওলানা হাফেজ ফজলুল হক, ইসলামাবাদ বোয়াল খালির মাওলানা আবু বকর, জালালবাদ লরাবাগের মাওলানা তৈয়ব শাহ, নিজেরা কাজী দাবী করে বিভিন্ন সময় গোপনে অপ্রাপ্ত বয়স্ক মিয়েদের কাবিনের টাকা আদায় করে স্টাম্পের মাধ্যমে বিবাহ নিবন্ধন করারও অভিযোগ রয়েছে যারকারণে নিকাহ নিবন্ধন বইতে অসংগতি পাওয়াই বইটি জব্দ করে নিয়ে যায় ইউএনও।
এ বিষয়ে নবগঠিত ঈদগাঁও’র উপজেলার অতিরিক্ত দায়িত্ব প্রাপ্ত ইউএনও জকরিয়ার সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করলে,তিনি জানান”এটা ঘটনা সত্য,যেহেতু আমার ভেরিফাইড আইডি থেকে দেওয়া হয়েছে এরা সত্যি,তাদের কে জরিমানা করা হয়েছে”
ইসলামাবাদ কাজী অফিসে নিয়োগকৃত আজীমকে কল করলে,তিনি জানান”আমরা ইউএনও অফিসে আছি,একটু সময় দেন,সব কাগজ পত্র দেখাচ্ছি ”
এই বিষয়ে ইসলামাবাদ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নুর সিদ্দিকের সাথে কথা বলা হলে তিনি জানান”বাল্য বিবাহের ঘটনা একটি ঘটেছে,জরিমানা করা হয়েছে,আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে কিনা জিজ্ঞেস করলে”তিনি জানান ইউএনও স্যার নির্দেশ দিয়েছেন, আইনি ব্যবস্থা নিতে”
এই বিষয়ে সাধারণ জনগণ বলেন,এই মওলানা কাজী আজিম প্রায় সময় মেয়েদের জন্মনিবন্ধনের সার্টিফিকেট জাল জালিয়াতি করে বাল্য বিবাহ করিয়ে দিচ্ছেন হর হামেশা।