• রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫, ১১:০৯ অপরাহ্ন
সর্বশেষ খবর
মহেশখালীতে ‘ফয়সাল ডাইন’ রেস্টুরেন্টের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু” কিডনি পাথর রোগীর খাদ্যাভ্যাস কেমন হওয়া উচিত ? “” কিডনি বিকলাঙ্গ রোগীর খাদ্য ব্যবস্থাপনা “কিডনি সুরক্ষায় করণীয়অবসর প্রাপ্ত সেনা সদস্যেকে জমি বিরোধের জেরে মারধর,, এএসইউ কর্তৃক ওয়ারেন্ট ভুক্ত এক আসামী গ্রেফতারকক্সবাজারে রামুর শীর্ষ ডাকাত শাহীন গ্রেফতার: সীমান্তে চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসের অবসানআশরাফ অর্জনে আলো ঝলমল এক পরিবার: ১৮তম NTRCA পরীক্ষায় “আরবি প্রভাষক পদে সুপারিশপ্রাপ্তমহেশখালীতে আধুনিকতার ছোঁয়ায় বদলে গেছে হাসপাতালে স্বাস্থ্য সেবাঅবশেষে কক্সবাজার থানায় সংবাদকর্মীর উপর হামলার ঘটনায় আদালতে মামলাঅফিস বন্ধের আগে প্রিপেইড মিটারে রির্চাজ করা ও জুনের মধ্যে বকেয়া বিল আদায়ের আহবান কক্সবাজার বিদ্যুৎ অফিসের

টেকনাফে আইন শৃংখলার চরম অবনতি : বাড়ছে খুন খারাপী, নেপথ্যের ইয়াবাডনরা অধরা

কক্সবাজারবানী
আপডেট : বৃহস্পতিবার, ৭ জানুয়ারী, ২০২১

সাইফুদ্দীন আল মোবারক:

কক্সবাজারের টেকনাফ রোহিঙ্গা অধ্যুষিত এলাকা হওয়ায় প্রতিনিয়ত রাত্রে শুনা যায় অবৈধ অস্ত্রের ঝনঝনানি,আতংকে দিনাপাত করছে টেকনাফ উপজেলার স্থানীয় সাধারণ মানুষ।অবৈধ অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে রামরাজত্ব করতে দিনরাত ফাঁকাগুলি ছুড়ে মানুষকে আতংকিত করে রাখছে বলে অভিযোগ করেছেন সচেতন মহল।টেকনাফের স্থানীয় ও রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীরা অবৈধ অস্ত্রগুলো খেলনা অস্ত্রের মতো ব্যবহার করে প্রতিনিয়ত গুম,খুন,অপহরণ,মেয়েদের ধর্ষণ,মুক্তিপণসহ নানা অপরাধ বীরদর্পে করে যাচ্ছে,যা দেখার মতো যেন কেউ নেই।অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে মুখ খোলার সাহস হচ্ছেনা কারো।অস্ত্রের মুখে তাদের এসব অপকর্মের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ,প্রতিরোধ গড়ে তুলতেও সক্ষম নয় কেউ।মেজর সিনহা হত্যার পর থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযান একটু শিথিল হওয়ায় সন্ত্রাসীদের দৌঁড়ত্ব আরো অতিরিক্ত বেড়ে গেছে বলে জানিয়েছেন টেকনাফের শিক্ষিত সমাজ ও স্থানীয় জনগোষ্ঠী।এসব সন্ত্রাসীদের খুটির জোর বাড়ানোর পেছনে কাজ করে যাচ্ছে ইয়াবার কালো টাকার মালিক ইন্ধনদাতা বিশাল এক জনগোষ্ঠী। যেসব ইন্ধনদাতা ও কালো টাকার গরমে অস্ত্রধারীরা বীরদর্পে চলাফেরা করছে এবং প্রতিনিয়ত মানুষ খুন করতে দ্বিধাবোধ করছে না। এমনকি সরকার দলীয় বড় বড় ত্যাগী নেতারাও বাঁচতে পারছেন না সন্ত্রাসীদের অস্ত্রের বুলেট থেকে।সত্যের পক্ষে লড়তে গিয়ে তাজা প্রাণ হারাচ্ছে ছাত্রলীগ,যুবলীগসহ অন্যন্য নেতাকর্মীরাও।গত ৩১ই ডিসেম্বার হ্নীলা ইউনিয়নের চৌধুরী পাড়া এলাকায় নিজের স্ত্রীকে খুন করেছে উপজাতী স্বামী “ওকিয়ওয়ান”।আর স্ত্রী “ছকিওয়ান”কে দিন দুপুরে নিজের স্বামীর হাতে প্রাণ হারাতে হয়েছে।
এই ঘটনার বিষয়ে সরেজমিন পরিদর্শন করে জানা যায়,হ্নীলা চৌধুরী পাড়াতে বেশির ভাগ সময় মাদকের আড্ডা বসে,যেখানে দূরদুরান্ত থেকেও ছুটে আসে মাদক সেবন করতে শতশত যুবকেরা।বিশেষ করে সন্ধার পর থেকে ঐ এলাকাতে মাদকের মেলা শুরু হয়,যা সারা রাত চলতে থাকে বলে জানা যায় এই মাদকের আসর।স্ত্রী হত্যার আসামী “ওকিওয়ান”ও সেসব মাদকের আড্ডায় বসে মাদক সেবন করতো,যে মাদক সেবনের কারণে নিজের স্ত্রীকেও হত্যা করতে দ্বিধাবোধ করেনি বলে জানা গেছে।মাদক ব্যবসায়ীরাই মূলত তাদের ব্যবসাকে টিকিয়ে রাখতে আস্ত্রধারী সন্ত্রাস বাহিনী গড়ে তুলছে টেকনাফে,এমন মন্তব্য ব্যক্ত করেছেন সচেতন মহল।গত ১৭ই ডিসেম্বরেও হ্নীলা ফুলের ডেইলে মরণ নেশা ইয়াবাকে কেন্দ্র করে দুই গ্রুপে গুলাগুলির ঘটনা ঘটেছে।যে ঘটনার ব্যাপারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ এলাকার সংবাদকর্মীগণ ও সাধারণ মানুষও অবগত আছেন।কিন্তু অস্ত্রধারীরা ইয়াবাডন ও কোটি কোটি টাকার মালিক হওয়ায় এপর্যন্ত কেউ প্রকাশ্যে তাদের বিরুদ্ধে মুখ খোলার সাহস পায়নি।বিশেষ করে হ্নীলা ইউনিয়নের রঙ্গীখালীর ডজন মামলার আসামী প্রকাশ্যে দিনদুপুরে মানুষ হত্যাকারী গিয়াস বাহিনীর প্রধান গিয়াস উদ্দীন প্রতিনিয়ত ফাঁকা গুলি করে রঙ্গীখালী এলাকাসহ পুরো হ্নীলা ইউনিয়নের মানুষকে আতংক করে রাখছে।তার বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে হুমকি দমকি দিয়ে মানুষের ঘর জ্বলিয়ে দেয়ারও অভিযোগ রয়েছে। অনুসন্ধানে জানা গেছে, বিভিন্ন সময় কক্সবাজার জেলায় আইনশৃংঙ্খলা বাহিনীর কঠোর অভিযানে সন্ত্রাসী ও ইয়াবা কারবারীদের অনেকেই বন্দুকযুদ্ধে নিহত হলেও রহস্যজনক কারণে ‘ফুলের আচড়ও’ লাগেনি সন্ত্রাসী গিয়াস বাহিনীর কোনো সদস্যদের গায়ে।

অথচ সন্ত্রাসী কার্যক্রম ছাড়াও রোহিঙ্গা ক্যাম্প ভিত্তিক একাধিক ইয়াবা সিন্ডিকেটও নিয়ন্ত্রণ করেন গিয়াস উদ্দীন ও তার পরিবার এবং তার বাহিনী,এমন অভিযোগেরও শেষ নেই।অস্ত্রধারী সন্ত্রাস বাহিনীর প্রধান গিয়াস উদ্দীন, তার পিতা গুরা মিয়া, তার দুই মা, ভাই-বোনসহ পরিবারের বেশিরভাগ সদস্যদের একাধিক ইয়াবার মামলাও রয়েছে।এতগুলো অপরাধের সাথে জড়িত থেকে বিভিন্ন অবৈধ কর্মকান্ডের নেতৃত্ব দিয়ে ডজন মামলা কাঁধে নিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখে দুলা মেরে,সে কিভাবে ধরাছোঁয়ার বাহিরে থেকে প্রকাশ্যে ঘুরাফেরা করে? এমন প্রশ্ন এখন সাধারণ মানুষের মুখে মুখে ।

নতুন বছরের শুরুতে টেকনাফের সাবরাংয়ে সন্ত্রাসীরা যুবলীগ নেতাকে খুন করে পুরো টেকনাফকে আতঙ্কিত করে দিয়েছে ইয়াবাডন কেফায়েত ও তার সন্ত্রাসীরা।যা ভুলার মতো নয় বলে জানিয়েছেন স্থানীয় লোকেরা।এমন মর্মান্তিক হত্যার ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন দলমত নির্বিশেষে সকল শ্রেণির মানুষ।স্থানীয় লোকদের অভিযোগ ,সত্যের পক্ষে প্রতিবাদ করার কারণে টেকনাফে যুবলীগ নেতা ওসমানগনি সিকদারকে তাজা প্রাণ দিতে হয়েছে।সেই হত্যার রেষ না কাটতেই সন্ত্রাসীরা পুলিশের হাত থেকে বহু মামলার আসামী ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা কালে আবারো খুরশেদ আলম নামক একজন গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেছে।এই ভাবে হত্যার মধ্যদিয়ে ভয়ংকর অবস্থায় দিনাপাতিত হচ্ছে টেকনাফের মানুষের।গত ৬ই ডিসেম্বার দিবাগত রাত্রেও হ্নীলা ইউনিয়নের লেদা নুরালীপাড়ায় আধিপত্যের জেরধরে দুপক্ষের মধ্যে গুলাগুলি হয়েছে। এধরণের গুলাগুলির আতংকের মধ্যেই টেকনাফের সাধারণ মানুষের জীবন যাচ্ছে।
এসব সন্ত্রাসীদের অস্ত্রদাতা,ইন্ধানদাতা,ইয়াবার কালো টাকা দিয়ে সহযোগিতাকারী ইবাডনদেন বিরুদ্ধে কঠোর ভাবে প্রদেক্ষেপ না নিলে অতিশীঘ্রই টেকনাফ উপজেলাকে অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী,ইয়াবাডনরা আফগানিন্তান,ফিলিস্তিন বানিয়ে ছাড়তে বেশিদিন সময় নিবেনা বলে মন্তব্য করছেন টেকনাফের শিক্ষিত সমাজ ও সচেতন জনগোষ্ঠি ।
এবিষয়ে টেকনাফ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হাফিজুর রহমানের কাছে মুঠোফোনে জানতে চাইলে তিনি বলেন,ইতোমধ্যে টেকনাফে যত খুন হয়েছে, সেই খুনের আসামীদের আমরা আইনের আওতায় আনতে সক্ষম হয়েছি।যারা প্রতিনিয়ত অস্ত্রবাজি বা সন্ত্রাসী কর্মকান্ড চালিয়ে যাবে অবশ্যই তাদের আইনের আওতায় আনতে পুলিশের তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান তিনি।


আরো বিভন্ন নিউজ দেখুন