মোঃ আশেক উল্লাহ ফারুকী:
টেকনাফ বিজিবি ৮ মাসে পৃথক অভিযানে ৪৬৮ কোটি ২ লাখ টাকার মাদক সহ ১৮৯ জন আটক করেছে।চোরাচালান জাতীয় অর্থনীতির সচল চাকা অচল করে দেয় এবং যুব সমাজের নৈতিক অবক্ষয় ডেকে নিয়ে আসে।রাতারাতি কালোটাকার মালিক বনে যেতে প্রতিযোগিতায় নেমে পড়ে চোরাকারবারিরা।চোরাচালান ও মাদকের কালোটাকার পেশিশক্তির প্রভাবে অশ্লীলতা ও অপকর্ম বিস্তার লাভ করে।চোরাচালানের জব্দকৃত পন্যের মধ্যে শীর্ষে মাদক এবং এর সাথে আরও একটি ভয়ংকর মাদক ক্রিস্টাল মেথ আইস যুক্ত হয়েছে। টেকনাফ হচ্ছে,চোরাচালান ও মাদকের গেটওয়ে এবং স্থল ও নৌপথ দিয়ে মিয়ানমার থেকে চলে আসে চোরাচালান বনাম মাদকের চালান।১৯৯২ সালে ইময়াবার আবির্ভাব ঘটে এবং ধারা এখনো চলমান রয়েছে। টেকনাফ সীমান্ত উপজেলার ৫৫ কিলোমিটার এর মধ্যে ১১টি সীমান্ত ফাড়ি চোরাচালান দমনে বিজিবি সদস্যরা অতন্দ্র প্রহরীর ন্যায় নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। ২০১৭ সালে ২৫ সেপ্টেম্বর১১লাখ রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ এবং ৩৪ ক্যাম্পে বসবাসের পর থেকে মাদক ও মানব পাচার বৃদ্ধিতে মাদক ও চোরাচালান দমনে একটি চ্যালেঞ্জ হয়ে দাড়িয়েছে।মাদক ও রোহিঙ্গা জাতীয় পর্যায়ে এখন প্রধান ফ্যাক্টরে পরিনত হওয়ায় এটি দমনে সংশ্লিষ্টদের রীতিমতো সমস্যায় পড়তে হয়েছে।মাদক হচেছ অশ্লীলতা ও অপকর্মের মূল। স্থল পথের চেয়ে বেশিরভাগ মাদক সাগর পথে পাচার হয়ে থাকে বেশি। বিশেষ করে শীতকালীন এবং পর্যটন মৌসুমে মাদক সহ অন্যান্য চোরাইপন্য দুদেশের সীমান্ত পর্যায়ে পেশাদার চোরকারবারীরা নিরাপদ মনে করে এবং এ সময় এর চাহিদা বেশী হওয়ার কারণে ইয়াবা ও বিদেশি মদের চাহিদা ও পাচার বৃদ্ধি পেয়ে থাকে। অপরাধ বিশেষজ্ঞদের মতে মাদক ও হুন্ডির কালোটাকার পেশিশক্তির প্রভাবে আইন শৃংখলা পরিস্থিতি অবনতি ঘটে হত্যা,অপহরণ, ডাকাতি, অবৈধ অস্ত্র, সন্ত্রাসী সহ বিভিন্ন অপকর্মের সয়লাব ঘটে। চলে ওদের এলাকায় আদিপত্য বিস্তার ও ক্ষমতার দাপট এবং জায়গায় জমি জবরদখল প্রতিযোগিতা।টেকনাফ সীমান্ত উপজেলায় অন্যান্য সংস্থা চোরাচালান দমনে নিয়োজিত রয়েছে। টেকনাফ ২ বিজিবি সূত্র মতে চলতি বছর ১৮ মাচ’ হতে ৯ নভেম্বর এ ৮ মাসে স্থল ও নৌপথে পৃথক অভিযান পরিচালনা করে মাদক সহ বিভিন্ন মালামালের বিপরীত ৪৬৮ কোটি ১ লাখ ৯৭ হাজার ৪৪৫ টাকার দামে মালামাল জব্দ করে এবং ৫৯৫ মামলায় ১৮৯ জন কে আটক করে। জব্দকৃত মালামালের মধ্যে ৭৬ লাখ ২১ হাজার ২৬৬ পিস ইয়াবা,ক্রিস্টাল মেথ আইস ৪৫,৩৩৮ কেজি,বিদেশি মদের বোতল ৮০১৮,বিয়ার ২৯,৯২৮ ক্যান,ফেনসিডিল ১২২ বোতল,গাঁজা ৩৬,৯২ কেজি,হিরোইন২,২২৮ কেজি ও বাংলা মদ ৯৪ লিটার। এছাড়া অন্যান্য মালামালের মূল্য ১০ কোটি ২৭ লাখ ৪৬ হাজার ৮২৫ টাকা। অস্ত্র১টি,গোলাবারুদ ১১ রাউন্ড।টেকনাফ ব্যাটলিয়য়ন (২ বিজিবি) অধিনায়ক লেঃ কর্নেল মহিউদ্দিন আহমেদ এ ব্যাটালিয়নে যোগদানের পর কৌশল অবলম্বন এবং তথ্য উপাত্ত অনুসন্ধান পূর্বক তার নেতৃত্ব ও নির্দেশেনায় মাদককারবারীর দুর্গে প্রশংসনীয় অভিযানে এ সফলতা অর্জন করেন।অধিনায়ক এ প্রতিবেদককে বলেন,টেকনাফ সীমান্ত বেশিরভাগ নাফ নদীর তীরে এবং উত্তর ও দক্ষিণ শাহপরীরদীপ বদরমোকাম হতে উখিয়া উপজেলার পালংখালী সীমানা পর্যন্ত ৫৫ কিলোমিটার এর দুরত্ব।এর মধ্যে ১১টি বিজিবি ক্যাম্প থাকলেও নাফ নদীর উপকূলীয় বেড়িবাঁধ ছাড়া বিকল্প কোন পথ নেই। চোরাচালান দমনে টেকসই বেড়িবাঁধ ও সড়ক না থাকায় বিজিবি জীবন বাজি রেখে অনুকুল পরিস্থিতিতে অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে।এদিকে সর্বশেষ ১০ নভেম্বর(শুক্রবার)সকালেবিজিবি গোপন সংবাদের মাধ্যমে জানতে পারে মিয়ানমার থেকে মাদকের একটি বড় চালান প্রবেশ করবে এমন সংবাদ পেয়ে টেকনাফ সদর ইউনিয়নের নাজির পাড়া সীমান্ত ফাড়ির একটু দক্ষিণে নাফ নদীর তীরে আলুগোলা নামক চিংড়ি ঘের দিয়ে ২/৩ জন লোকের মধ্যে কাঁদে বস্তা দেখে দায়িত্বে নিয়োজিত বিজিবি অভিযানে নামলে পাচারকারীরা ওদের দেখে বস্তা ফেলে ওরা কেউডা বাগানে পালিয়ে যায়। ঘটনা স্থল থেকে বস্তার ভিতর ২ লাখ ১০ হাজার মালিক বিহীন ইয়াবা জব্দ করে এবং মাদক আইনে মামলা রুজু করা হয়েছে।