* স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন
* প্রদীপ গংয়ের বিরুদ্ধে আদালতে দায়ের কৃত মামলাটিও ঝুলে আছে
* সাংবাদিক নেতাদের উদ্বেগ
মো:ফয়সাল
মেজর সিনহা হত্যা মামলায় ফাঁসির দণ্ডাদেশপ্রাপ্ত আসামি বহিস্কৃত ওসি প্রদীপ কুমার দাসের হাতে অমানবিক নির্যাতনের শিকার ফরিদুল মোস্তফা খানের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত ৬ মিথ্যা মামলা এখনও প্রত্যাহার হয়নি।
সাজানো মামলায় টানা ১১ মাস ৫ দিন কারাভোগের পর জামিনে এসে প্রদীপ গংয়ের বিরুদ্ধে আদালতে দায়েরকৃত তার ফৌজদারি মামলাটিও রেকর্ড হয়নি।
এদিকে, মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও ন্যায় বিচারের দাবিতে আদালতের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন সাংবাদিক ফরিদুল মোস্তফা খান। কিন্তু মামলার কোন কুল কিনারা হচ্ছে না। স্ত্রী ও অবুঝ সন্তানদের নিয়ে উৎকণ্ঠায় দিন পার করছেন। ফরিদুল মোস্তফা খান আমাদের সময় মিডিয়া গ্রুপের কক্সবাজারস্থ আবাসিক সম্পাদক, দৈনিক কক্সবাজারবানী ও জনতারবানী সম্পাদক।
তিনি অভিযোগ করেছেন, মিথ্যা অভিযোগে দায়েরকৃত মামলাগুলো প্রত্যাহার চেয়ে প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে আবেদন করছেন বাংলাদেশ অনলাইন সংবাদপত্র সম্পাদক পরিষদ। অনেক বছর হয়ে গেল। এখনো কোনো সিদ্ধান্ত আসে নি।
অদৃশ্য কারণে এসব মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের কোন লক্ষণই দেখা যাচ্ছে না। কারামুক্তির পর সরকারের সংশ্লিষ্ট অনেকেই কথা দিলেও কেউই কথা রাখেননি।
এই অবস্থায় নির্যাতিত সাংবাদিক ফরিদুল মোস্তফা নিজের সকল মিথ্যা মামলা দ্রুত প্রত্যাহার ও জড়িতদের বিরুদ্ধে তার দায়েরকৃত মামলা আমলে নিয়ে আসামিদের আইনের আওতায় আনতে প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী,বিচার বিভাগসহ সরকারের সংশ্লিষ্ট উচ্চ পর্যায়ের আবারো তড়িৎ হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন নির্যাতিত সাংবাদিক ফরিদুল মোস্তফা।
তিনি বলেন, মাদক ও ঘুষের বিরুদ্ধে লিখেছি বলে প্রদীপ ও তার লালিত মাদক ব্যবসায়ায়ীরা বর্বর কায়দায় নির্যাতন করছে। একে একে ৬ টি মিথ্যা মামলা দিয়ে টানা ১১ মাস কারাগারে রেখেছে। আমি বর্তমানে শারীরিক, মানসিক ও আর্থিক বিপর্যয়ে আছি।
এই মামলা চালাতে পারছিনা আর।কাজেই এসব মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার না হলে বিনা অপরাধে আমার সাজা হতে পারে।
আর তাদের বিরুদ্ধে যে মামলা করেছি তা রেকর্ড না হওয়া মানে অপরাধীদের প্রশ্রয় দেওয়া। এতে করে দেশের বিচার ব্যাবস্থা, ন্যায় বিচার ও সরকারের ভাবমূর্তি প্রশ্নবিদ্ধ থেকেই যাবে অনন্তকাল ।
এদিকে বিনা অপরাধে সাংবাদিক ফরিদুলের দীর্ঘদিন কারভোগ, শারীরিক নির্যাতন, মামলা প্রত্যাহার না হওয়া ও জড়িতদের আইনের আওতায় না আনাসহ সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশে নজিরবিহীন সাংবাদিক নির্যাতনের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন দেশী বিদেশি মানবাধিকার সংগঠন, সুশীল সমাজ ও সাংবাদিকদের বিভিন্ন সংগঠন। তারা এসব ঘটনার ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে সাংবাদিক সুরক্ষা আইনসহ বিভিন্ন দাবিতে প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রতিবাদ সভাবও মানববন্ধন অব্যাহত রেখেছে।
বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরাম বিএমএসএফ কেন্দ্রীয় কমিটির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি আহমেদ আবু জাফর বলেছেন, সাংবাদিক ফরিদুল মোস্তফা খানসহ নির্যাতিত সাংবাদিকদের মানবিক সহায়তা দিতে প্রধানমন্ত্রীসহ সরকারের উপর মহলের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা দীর্ঘ দিনের। সকল মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও নির্যাতনে জড়িতদের আইনের আওতায় আনতে সরকার ব্যর্থ হলে দেশব্যাপী কঠিন আন্দোলন করা হবে।
বিএমএসএফ কেন্দ্রীয় এই নেতা বলেন, সাংবাদিকদের জীবনের নিরাপত্তা না থাকলে দেশে সত্য সংবাদ কেউ পরিবেশন করবেনা। এতে রাষ্ট্রের ব্যাপক ক্ষতি এবং মাদক, ঘুষ, দুর্নীতি বেড়ে আইন শৃংখলার ভয়াবহ অবনতি ঘটবে।
এদিকে স্বাধীনতা স্বপক্ষীয় জাতীয় সাংবাদিক সংস্থার কেন্দ্রীয় চেয়ারম্যান লায়ন নুরুল ইসলাম অনুরূপ বক্তব্য দিয়ে বলেন,নির্যাতিত সাংবাদিক ফরিদুল মোস্তফা খানের উপর যে জুলুম হয়েছে তা পৃথিবীর সবাই জানে।
এতদিন তার মামলা প্রত্যাহার না করা এবং জীবেনর নিরাপত্তা না দেওয়ার খুবই লজ্জা জনক।
আমরা আশা করি, জল ঘোলাটে হওয়ার আগে কর্তৃপক্ষ বিষয়টি উড়িয়ে দিবেন না।
এসব মিথ্যা মামলার ব্যাপারে কক্সবাজার জেলা দায়রা জজ আদালতের পিপি ফরিদুল আলম বলেন,লেখালেখি করে মামলা প্রত্যাহারের সুযোগ নেই।
সরকার আইন মন্ত্রনালয়ের মাধ্যমে বিষয়টি আইনগত পক্রিয়ায় শেষ করতে পারে।
ফরিদুল মোস্তফার আইনজীবিরা এই ব্যপারে বলেছেন, এসব মামলা প্রত্যাহারের ব্যাপারে নির্যাতিত সাংবাদিক ফরিদুল মোস্তফার পক্ষে বাংলাদেশ অনলাইন সংবাদপত্র পরিষদ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে যে আবেদন করেছেন, সেটির মাধ্যমে তা নিষ্পত্তি সম্ভব।
মামলা পরিচালনায় যার সামর্থ নেই।তাকে হাইকোর্ট দেখিয়ে লাভ কি?
এছাড়া উক্ত মামলা হওয়ার আগে প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কার্যলয়ে ফরিদুল মোস্তফা জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে যে আবেদন করেছিলেন,সেই মতে ব্যবস্থা নিলেই এক আদেশে সব মামলা অবৈধ হয়ে যাবে।
উল্লেখ্য, এসব মিথ্যা মামলার বৈধতা চ্যালেন্জ করে ফরিদুল মোস্তফার স্ত্রীর দায়ের করা মহামান্য হাই কোর্টের রিট আবেদনের প্রেক্ষিতে সব মামলা এক আদেশে প্রত্যাহার করে তার জীবনের নিরাপত্তা ও উপযুক্ত ক্ষতি পূরণের ব্যবস্থা করতে পারে সরকার।